ঢাকাঃ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস টিকিয়ে রাখার জন্য পাঠ্যপুস্তকে মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসের পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধীদের ইতিহাসও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, ‘মানুষ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে যাচ্ছে বলেই মুক্তিযোদ্ধারা আজ অবমূল্যায়িত হচ্ছে। তাই মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাসের পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধীদের ইতিহাসও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এছাড়া বিসিএসে মুক্তিযুদ্ধের ওপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে।’
শুক্রবার (১৫ জুলাই) বেলা ১১টায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পাঠ্যসূচিতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যথেষ্ট নয়। এটি আরও সমৃদ্ধ করা দরকার। মুক্তিযোদ্ধাদের ইতিহাস সংরক্ষণ করলেই হবে না। এর সঙ্গে রাজাকাররা কীভাবে লুটপাট করেছে, অগ্নি সংযোগ করেছে, ধর্ষণ করেছে, নির্যাতন করেছে সেই ইতিহাসগুলো তুলে ধরতে হবে। পাঠ্যসূচিতে এগুলো থাকা উচিত। না হলে প্রকৃত ইতিহাস আগামী প্রজন্ম জানতে পারবে না।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে অনেকেই মারা গেছে। তাদের বিচার করলে আমাদের লাভ হবে না কিন্তু জাতির লাভ হবে। এটা জানবে অপরাধীদের বিচার হয়েছে। জাতি জানবে অপরাধ করলে বিচার হয়।
১২ ধরনের বারকোড দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ডিজিটাল সার্টিফিকেট ছাপানো শেষ হয়েছে জানিয়ে মোজাম্মেল হক বলেন, ১৮ জুলাই থেকে মুক্তিযোদ্ধারের ডিজিটাল সনদ বিতরণ করা হবে। আমরা ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বাতিল করলেও হাইকোর্ট তা গ্রহণে তালিকা পাঠায়। আমরা কোর্টের আদেশে মুক্তিযুদ্ধ করি নাই।
তিনি আরও বলেন, কোটা সংস্কার করা একটি যৌক্তিক দাবি। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা চাকরিতে না আসতে পারলে চাকরিতে স্বাধীনতাবিরোধীদের নৈরাজ্য বেড়ে যাবে। সংসদ ভবন এলাকা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের কবর সরাতে হবে। এটি জাতির জন্য কলঙ্কের।
তিনি আরও বলেন, বিসিএস পরীক্ষায় মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের উপর ১০০ নম্বরের পরীক্ষা নিতে হবে। অনেক বলার পর ৫০ নম্বর করা হয়েছে। আমরা এখনো অনেক ব্রিটিশ আইনেই চলি। কিছু কিছু বিষয়ে এখনো নতুন আইন হয়নি স্বাধীনতার পরে।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান বীর প্রতিক শাহজাহান কবীরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাজাহান খান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য, সংসদ সদস্য নৌ-কমান্ডো মীর মোশতাক আহমেদ (রবি) ও নৌ-কমান্ডো অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।
এমবুইউ