ঢাকাঃ সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও করোনা একটি ভয়াবহ আকার ধারনের রুপ নিয়েছিলো। তবে বাংলাদেশ সরকারের সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের কারনে তেমন প্রকোপ ধারন করতে পারেনি। সারাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক বিভিন্ন বিষয় চিন্তা করে ঈদের আগে স্বল্প পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলে দেওয়া হয় আন্ত:জেলা গণপরিবহনগুলো। গতকাল সোমবার(২৫ মে) স্বাস্থ্যবিধি মেনে এবং অর্ধৈক যাত্রী পরিবহণের শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয় দুর পাল্লার বাস, লঞ্চ, ট্রেন।
রোববার (২৩ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানায়, ঈদের আগে গণপরিবহন চালুর পর থেকেই সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনার হার ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরে যাতায়াতে দেশের সড়ক ও মহাসড়কে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত হয়েছেন। একই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৬২২ জন। এবং গতকাল সোমবার (২৫ মে) ৭ জনের অধিক প্রানহানি ঘটেছে সারাদেশ।
তবে সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৩১ জন নিহত ও ৭২২ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়, ঈদযাত্রা শুরুর দিন গত ৭ মে থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২১ মে পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ৩১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত এবং ৬২২ জন আহত হয়েছেন।
প্রতিবেদেনে বলা হয়, উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ২টি ঘটনায় ২ জন নিহত হয়েছেন। নৌপথে ৩টি দুর্ঘটনায় ৬জন নিহত ও ১০০ জন আহত হয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে যৌথভাবে ৩২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৩১ জন নিহত ও ৭২২ জন আহত হয়েছেন। অথচ দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি শিকার করে লকডাউনের মতো কঠিন কর্মসূচি ও বিপুল অর্থ খরচ করে ও বিশাল কর্মযজ্ঞের কারণে একই সময়ে করোনার ভয়াল থাবা প্রতিরোধ করে সংক্রমণে মৃত্যু ৫১৪ জনের মধ্যে সীমিত রাখতে সক্ষম হয়েছে। অথচ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় সমসংখ্যক প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি হলেও সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কোন কর্মসূচি বা অর্থ বরাদ্দের লেশমাত্র ছিল না।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, বরাবরের মতো এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। এবারের ঈদে ১৪৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ১৩৯ জন নিহত, ১৯৯ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৪৫.২৮ শতাংশ, নিহতের ৪৩.০৩ শতাংশ এবং আহতের ৩১.৯৯ শতাংশ প্রায়।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘লকডাউনে দেশে গণপরিবহন বন্ধ ও মানুষের যাতায়াত অত্যন্ত সীমিত থাকার পরেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা, সড়কে নিরাপত্তার দায়িত্বরত প্রতিষ্ঠানগুলো কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করার ফলে মাত্র ৮ থেকে ১০ শতাংশ মানুষের যাতায়াতে এত বেশি সংখ্যক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।’
সড়ক দুর্ঘটনাকে মহামারি করোনা ভাইরাসের মতো গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার বলে মতামত বিশেষজ্ঞদের।
