1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

নলকূপে পানি উঠছে না যশোরে 

বিল্লাল হোসেন, যশোর প্রতিনিধি প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২১, ০৩:১৪ পিএম নলকূপে পানি উঠছে না যশোরে 
ছবি: আগামী নিউজ

যশোর:  শহরের বেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা কামাল আহমদের বাড়ির নলকূপে (টিউবওয়েল) একমাস ধরে পানি উঠছেনা। পাশের বাড়ির সাবমার্সিবল কল থেকে তিনি খাবার পানি সংগ্রহ করেন। পৌরসভার বারান্দিপাড়া এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেনের নলকূপের অবস্থা একই। নলকূপে পানি না ওঠার কারণে মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

যশোর বিএডিসির (সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাবুব আলম জানান, জানুয়ারি মাস থেকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নামতে শুরু করে। এপ্রিল মাসে পানির স্তর সর্বোচ্চ নিচে নেমে যায়। তবে এবার একটু আগেভাগেই মার্চ মাস থেকেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। সাধারণত বছরে গড় বৃষ্টিপাত হয় ২০৩ সেন্টিমিটার। তুলনামূলক কম বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানির স্তর নামছে। বর্তমানে পানির স্তর ২৬ ফুট ৯ ইঞ্চি নীচে নেমে গেছে। ২০২০ সালে ২৫ ফিটে নেমেছিল। একারণে টিউবওয়েলে পানি ওঠা বন্ধ হয়ে গেছে। 

যশোর বিএডিসির (সেচ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো: আবদুল্লাহ আল রশিদ জানান, কৃষিকাজের সেচের কারণেও ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যায়। এখন চলছে বোরো ধানের মৌসুম। ভূগর্ভ থেকে গভীর নলকূপ ও স্যালো মেশিনে অপরিকল্পিভাবে পানি উঠানো হয়। বৃষ্টি শুরু হলে পানির স্তর স্বাভাবিক হয়ে যাবে। 

তিনি জানান, সাধারণত পানির স্তর স্বাভাবিক থাকে ১৫ থেকে ২০ ফুটের মধ্যে। বিএডিসি অফিস (সেচ) সূত্রে জানা যায়, জেলায় গভীর নলকূপের সংখ্যা এক হাজার ৫শ’ ৬৭টি। এসব নলকূপ দিয়ে ২৫ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে পানি দেয়া হয়। অন্যদিকে স্যালো টিউবওয়েলের সংখ্যা ৬৩ হাজার ৭৯৩টি। এসব স্যালো টিউবওয়েল দিয়ে একলাখ ২৩ হাজার ৪শ’ ৮২ হেক্টর জমিতে পানি দেয়া হয়। 

কর্মকর্তারা জানান, আমাদের দেশে বোরো ধান চাষের সময় অনেক পানি অপচয় হয়। এক কেজি ধান উৎপাদন করতে আমাদের দেশে পানি লাগে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার লিটার। উন্নত ধান উৎপাদনকারী দেশ থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে এর অর্ধেক পানি খরচ হয়। এসব দেশে এক কেজি ধান উৎপাদন করতে পানি খরচ হয় এক থেকে দেড় হাজার লিটার। কৃষিকাজে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা পানি অপচয় রোধ করে। বারিড পাইপের মাধ্যমে মাটির নিচ থেকে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামে জমিতে পানি দেয়া হয়।

 আমাদের দেশে জমিতে নালা কেটে পানি দেয়া হয়। ফলে অর্ধেক পানি মাটিতে চুষে নেয়। পানির অপচয় রোধ করতে ইতোমধ্যে বিএডিসির উদ্যোগে পরীক্ষামূলকভাবে যশোর জেলার বেশ কয়েকটি উপজেলায় উন্নত প্রযুক্তির বারিড পাইপের মাধ্যমে জমিতে পানি দেয়া হচ্ছে। এতে যেমন পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব হচ্ছে, তেমনি জমিতে কম সময়ে দ্রুত পানি পৌঁছে যাচ্ছে। বোরো ধান চাষের কাজে অনেক পানি অপচয়ের ফলে প্রতিবছরে এসময় তীব্র খাবার পানির সংকট দেখা দেয়। 

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী জাহিদ পারভেজ জানান, জেলায় আমাদের ১৯ হাজার ৭৯৬টি অগভীর নলকূপ রয়েছে। এখন পানির স্তর নেমে যাবার কারণে পানি কম উঠছে। আবার অনেক কলে পানি উঠছে না। যেসব এলাকায় পানির সংকট দেখা দেয়, ওইসব এলাকায় ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে গভীর নলকূপ বসিয়ে খাবার পানিসহ গৃহস্থালির কাজে পানির ব্যবস্থা করা হয়। যশোর পৌরসভার সচিব আজমল হোসেন জানান, তাদের অধীনে ২৩০টি হস্তচালিত নলকূপ ও ২৯টি গভীর নলকূপ রয়েছে। 

প্রতিদিন পানির চাহিদা রয়েছে ২ কোটি লিটার। যার সবটাই সরবরাহ করা হচ্ছে। তবে পানির স্তর নেমে যাবার কারণে অনেক টিউবওয়েলে পানি উঠছেনা। বিশেষ করে বাড়ির টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যশোর পৌরসভায় ডিজিটাল মিটার স্থাপন হবার কারণে কখন টাকা শেষ হয়ে যাচ্ছে বোঝা যাচ্ছে না। এতে অনেক সময় বিদ্যুৎ লাইন না থাকার কারণে গ্রাহকরা পানি পাচ্ছে না। বিষয়টি আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। 

যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের (এমএম কলেজ) ভূগোল বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছোলজার রহমান জানান, প্রতিবছর অপরিকল্পিতভাবে পানি উঠানো হচ্ছে, সেই পরিমাণ পানি ভূগর্ভে পৌঁছাচ্ছে না। আবার বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। যে কারণে পানির স্তর  নেমে যাচ্ছে। এটা রোধে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।


আগামীনিউজ/মালেক


 

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner