নারায়ণগঞ্জঃ জেলার ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টে।
একইসঙ্গে প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে কেন ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
গত বুধবার (০৮ সেপ্টেম্বর) এ-সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকার। তার সঙ্গে ছিলেন রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার মার ই-য়াম খন্দকার।
আদালত আগামী ৭ দিনের মধ্যে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে হতাহতদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য প্রাথমিকভাবে ৫ লাখ টাকা নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে হস্তান্তর করতে বলেছেন। জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে এই টাকা বিতরণ করবেন বলেও আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
গেল শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ৯টার দিকে ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা এলাকার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে ভয়াবহ এসি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এরপর দগ্ধ ৩৭ জনকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতদের মধ্যে মামুন নামে একজন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ৮ মুসল্লির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক। তাদের প্রত্যেকেরই শ্বাসনালী, মুখমণ্ডলসহ শরীরের বেশিরভাগ অংশ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
নিহতরা হলেন- সাব্বির (২২), দেলোয়ার হোসেন (৪৫), জুয়েল (৭), জামাল (৪০), রাসেল (৩০), জুবায়ের (১৪), রিফাত (১৮), হুমায়ুন কবির (৪৩), কাঞ্চন (৩৭), নয়ন (২৭), হুমায়ুন কবির (৭০), মোস্তফা কামাল (৩৫), ইব্রাহিম (৪৩), রিফাত (১৮), জুনায়েদ (১৭), কুদ্দুস বেপারি (৭২), রাসেল (৩৪), বাহাউদ্দিন (৬২), মালেক (৬০), মিজান (৪০), নাদিম আহমেদ (৪০), শামীম হাসান (৪৫), জুলহাস, মো. আলী মাস্টার (৫৫), আবুল বাসার মোল্লা (৫১), মনির ফরাজী (৩০) ও ইমরান (৩০)।
এ ঘটনায় গেল সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) হতাহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থে একটি রিট আবেদন নারায়ণগঞ্জের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মার ই-য়াম খন্দকার।
রিটে বিদ্যুৎ ও জ্বারানি মন্ত্রণালয়ের সচিব, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার (০৬ সেপ্টেম্বর) বিস্ফোরণের ঘটনায় বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এসব প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হলে আদালত প্রতিবেদনগুলো পর্যালোচনা করে আইনজীবীকে রিট আবেদন করতে বলেন।
আগামীনিউজ/জেহিন