চাল, ডাল, পেঁয়াজ, চিনি ও ভোজ্য তেলসহ প্রায় সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতিতে জনজীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। এ অবস্থায় পানি ও বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই মানবিক মূল্যবোধের পরিচায়ক হতে পারে না।
মঙ্গলবার সকালে (১০ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘পানি ও বিদ্যুতের সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্ধ্বগতি রোধের দাবিতে’ ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্সের (এনডিএ) মানববন্ধন কর্মসূচিতে সভাপতির বক্তব্যে এসব মন্তব্য কারেন এনডিএর চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদার।
তিনি বলেন, সরকারি দলের সাধারণসম্পাদকের মতে বিদ্যুৎ খাতে বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকার ভর্তুকি মেটাতে এবং স্থানীয় সরকার কর্তৃপক্ষ,ওয়াসা কর্তৃপক্ষের তোঘলোকি সিদ্ধান্তের কারণে নিন্মবিত্ত সাধারণ মানুষকে বিদ্যুতে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১৩৩ টাকা ও পানির জন্য কমপক্ষে ৩০০ টাকা বাড়তি খরচ করতে হবে। অধিকিন্তু, এর ফলে শিল্পোৎপাদিত, পণ্যের মূল্যও বাড়বে। যা জনবান্ধব ও শ্রমিকবান্ধব দাবিদার সরকারের আমলে প্রত্যাশিত নয়।
এনডিএর চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসূচীতে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান রুমা আলী। এনডিএর পক্ষে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমজীবী পার্টির সভাপতি আব্দুল কাদের জিলানী, স্বাধীনতা পার্টির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মাস্টার মোখলেছুর রহমান, এনডিএর ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা আমিন আহমেদ। আরো বক্তব্য রাখেন ভাড়টিয়া পরিষদের সভাপতি বাহারানে সুলতান বাহার।
সংহতি প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, বিদ্যুত ও পানির মূল্যবৃদ্ধি জনস্বার্থ বিরোধী ও জনগনের উপর জুলুম। বিদ্যুত ও পানির মূল্যবৃদ্ধির ফলে দেশের মানুষের জীবনযাপনের খরচ আরো বৃদ্ধি পেলো। এমনিতে চাল, ডাল, পিয়াজ, ভোজ্যতেল, চিনি, আদা-রসুনসহ বেশ কয়েকটি নিত্যপণ্যের অতিরিক্ত দামে অস্বস্তিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ। চালের মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কয়েক দফা। এখনও চালের বাজারে চলছে অস্থিরতা। এর মধ্যেই বিদ্যুত ও পানির মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা দ্রব্য মূল্যকে আরো উসকে দেবে। যার ফলশ্রুতিতে ব্যাপকভাবে চাপে পড়বে সাধারণ মানুষ। জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বাড়ছে; ওই অনুপাতে আয় না বাড়ায় নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা পড়েছেন বিপাকে। পারিবারিক ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিবিদদের মতে বিদ্যুৎ খাত অত্যন্ত দুর্নীতিগ্রস্থ। সুতরাং এই খাতের দুর্নীতি বন্ধ না করে মানুষের ওপর ব্যয়ের বোঝা চাপানো যৌক্তিক নয়। দেশ-জনগনের স্বার্থে সরকারের উচিত হবে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি না করে দুর্নীতিগ্রস্থ বিদ্যুত খাতকে সংস্কারের ব্যবস্থা করা।
বিডিএফ চেয়ারম্যান রুমা আলী বলেন, মেহনতী মানুষের কথা চিন্তা করে বিদ্যুত-পানির অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা উচিত সরকারের।
বিএসপি সভাপতি আবদুল কাদের জিলানী বলেন, এমন এক সময় বিদ্যুত ও পানির মূল্যবৃদ্ধি করা হল, যখন করোনাভাইরাসের কারণে দেশের পুরো অর্থনীতি প্রায় স্থবির। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে বাধ্য।
তাই অন্ততঃ বিদ্যুৎ ও পানির সাম্প্রতিক মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিলেরজন্য ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এলায়েন্সস (এনডিএ)'র মানববন্ধন কর্মসূচি থেকে জোর দাবি জানানো হয়।
আগামীনিাউজ/সুশান্ত/মাসুম