ঢাকা : বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাহাত খান মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত প্রখ্যাত কথাশিল্পী ও প্রবীণ সাংবাদিক, প্রতিদিনের সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক রাহাত খানের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছে এডিটরস গিল্ড।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু এক শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘সাংবাদিকতা ও সাহিত্য জগতে রাহাত খানের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’
জাতীয় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য রাহাত খানের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। আগামীকাল শনিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে বলেও ওই শোক বার্তায় জানিয়েছেন।
শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টায় বাসাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। উনার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে বলে তার স্ত্রী অপর্ণা খান জানিয়েছেন। তবে কখন হবে তা জানা যায়নি। রাতে মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হবে।
গত ২০ জুলাই রাহাত খানকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগের দিন বাসায় খাট থেকে নামতে গিয়ে কোমরে ব্যথা পান তিনি। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে এক্স-রে করা হলে পাঁজরে গভীর ক্ষত ধরা পড়ে। এর পাশাপাশি তার শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে তাকে বারডেম হাসপাতালের আইসিউতে ভর্তি করা হয়।
দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, কিডনি, ডায়াবেটিকসসহ বার্ধক্যজনিত নানা রোগে ভুগছেন তিনি। যার জন্য তার চিকিৎসা প্রক্রিয়াটা জটিল হয়ে পড়ায় সার্জারি করা যাচ্ছিল না বলে বাসাতেই অবস্থান করছিলেন।
রাহাত খান বাংলাদেশের একজন খ্যাতিমান কথাশিল্পী। ছোটগল্প ও উপন্যাস উভয় শাখাতেই তার অবদান উল্লেখযোগ্য। সাংবাদিক হিসেবেও রাহাত খানের অবদান উল্লেখযোগ্য। দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় তিনি ষাটের দশক থেকে কর্মরত। তিনি দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন।
তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রদত্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত হন। বিখ্যাত সিরিজ মাসুদ রানার রাহাত খান চরিত্রটি তার অনুসরণেই তৈরি করা।
রাহাত খান ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কথাসাহিত্যিক হিসেবে সমাদৃত হলেও কর্মসূত্রে রাহাত খান আপাদমস্তক ছিলেন সাংবাদিক।
আগামীনিউজ/এসপি