কিডনিতে পাথর এখন খুব সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। নারী বা পুরুষ সবাই এ সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। এই পাথর ক্ষতিগ্রস্ত করছে শরীরের কিডনিকে। আর দেরিতে এই রোগ ধরা পড়ায় অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। ঘরোয়া পদ্ধতিতে দূর করতে পারেন কিডনির পাথর।
চলুন জেনে নিই কিডনি পাথর কী?
কিডনির ভেতরে মিনারেল জমে ক্রিস্টাল বা স্ফটিকের মতো পদার্থ তৈরি করে, একে কিডনি পাথর বলা হয়। অর্থাৎ ক্যালসিয়াম ও অক্সালেটের ডিপোজিশন হলে এই রোগের উৎপত্তি হয়।
এই রোগের লক্ষণ-
১. বমি বমি ভাব বা কখনো কখনো বমি হওয়া।
২. তলপেটের নিচে এবং কুঁচকিতে ব্যথা হওয়া।
৩. পাঁজরের নিচে অসহ্য যন্ত্রণা হওয়া এবং এই ব্যথার তীব্রতা ওঠা নামা করে।
৪. প্রস্রাব করতে গেলে ব্যথা হওয়া এবং কালচে লাল, লাল কিংবা বাদামি রঙের প্রস্রাব হওয়া।
৫. বারবার প্রস্রাব পাওয়া এবং স্বাভাবিকের তুলনায় প্রস্রাব বেশি পরিমাণে হওয়া।
৬. দুর্গন্ধ ও ফেনার মতন প্রস্রাব। কিডনিতে পাথর বিকাশের ক্ষেত্রে ডিহাইড্রেশনের অবদান অনেক। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা কিডনিতে পাথর নিরাময়ে সহায়তা করতে পারে।
আসুন জেনে নিই ঘরোয়া উপায়ে কীভাবে কিডনি পাথর দূর করবেন –
১. প্রচুর পানি পান করতে হবে। খুব ছোট আকারের পাথর দেখা দিলে পরিমাণমতো পানি পানের মাধ্যমে তা সারিয়ে তোলা সম্ভব। তবে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
২. তুলসী পাতায় থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড কিডনির পাথরকে ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত দুবার করে তুলসীর রস খান। আর তুলসীর পাতা দিয়ে চা করেও পান করতে পারেন।
৩. পাতিলেবুর রসে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড ক্যালসিয়ামজাত পাথর তৈরিতে বাধা সৃষ্টি করে এবং ছোট পাথরগুলোকে ভেঙে বের করে। রোজ সকালে পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশ্রিত করে পান করুন অথবা দিনের যেকোনো সময়ে লেবুর রস পান করুন।
৪. ডালিম রসে থাকা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট কিডনিকে সুস্থ রাখতে এবং পাথর ও অন্যান্য টক্সিনকে দূর করতে সাহায্য করে। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সারাদিনে কতবার এটি পান করবেন তা ঠিক করুন।
৫. আপেল সিডার ভিনিগারে থাকা অ্যাসিটিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর দূর করে এবং ব্যথা কমাতেও সাহায্য করে। আপেল সিডার ভিনিগারের সঙ্গে দুই টেবিল চামচ পানি মিশিয়ে পান করুন। তবে একদিনে ১৬ চামচের বেশি খাবেন না।
৬. মেথি বীজ কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ ও চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, বীজগুলো কিডনিতে জমাকৃত পাথর হ্রাস করে ও কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে। এক কাপ ফোঁটানো জলে ১ থেকে ২ চা চামচ শুকনো মেথি বীজ দিন। এটি প্রতিদিন পান করুন।
৭. কালোজিরা বীজ একটি গবেষণা অনুযায়ী, কালোজিরার বীজ কিডনিতে ক্যালসিয়াম অক্সালেট স্টোন গঠনে উল্লেখযোগ্যভাবে বাধা দেয়। ২৫০ এমএল গরম জলে হাফ চা চামচ শুকনো কালোজিরা বীজ দিন। এটি দিনে দুবার পান করুন। তবে এগুলো ব্যবহারের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
তথ্যসূত্র: স্কাইবোল্ড
আগামীনিউজ/ হাসি/এনএনআর