-20230624102656.jpg){kind=tracking}
ঢাকাঃ ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ বাহিনীর প্রধান সহযোগী পিএমসি ওয়াগনারের শীর্ষ কমান্ডার তার দলের যোদ্ধাদের নিয়ে মস্কোর সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, মস্কোর নেতৃত্বকে উৎখাত করতে নিজ দলের ২৫ হাজার যোদ্ধা নিয়ে রাজধানীর উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি।
তার এই ঘোষণার জবাবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে বলেছেন, এই বিদ্রোহে সংশ্লিষ্টদের সবাইকে বিচারের মুখোমুখী করা হবে অবশ্যই তাদেরকে শাস্তি পেতে হবে।
এর মধ্যেই ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যদের জন্য বার্তা দিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। শনিবার এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘আমরা পিএমসি ওয়াগনারের যোদ্ধাদের তাদের শীর্ষ কমাণ্ডারকে অনুসরণ না করার অনুরোধ জানাচ্ছি। আপনাদের শীর্ষ কমান্ডার প্রিগোজিন আপনাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে এবং নিজের ব্যাক্তিগত উচ্চাভিলাষ পূরণ করতে এই অপরাধমূলক সশস্ত্র বিদ্রোহের ডাক দিয়েছে।’
‘দয়া করে আপনারা তাকে (প্রিগোজিন) অনুসরণ করা বন্ধ করুন। যেসব যোদ্ধা পিএমসি ওয়াগনার থেকে সরে দাঁড়াবেন— তাদের সবাইকে আমরা নিরাপত্তা দেবো। রাশিয়ার নিয়মিত সেনাবাহিনীতেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে।’
‘যারা বিদ্রোহ থেকে সরে আসতে চান— তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় প্রতিনিধি বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন,’ বলা হয় সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে।
২০২২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করেছে রুশ বাহিনী। এই অভিযান শুরুর কয়েক মাস পর রুশ বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় রুশভিত্তিক বেসরকারি সামরিক কোম্পানি পিএমসি ওয়াগনার। ইউক্রেন ছাড়াও সিরিয়া, লিবিয়া, সেন্ট্রাল আফ্রিকা, মালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অর্থের বিনিময়ে সরকারি বাহিনীর সহযোগী হিসেবে যুদ্ধ করছেন পিএমসি ওয়াগনারের সেনাসদস্যরা।
ইউক্রেনে রুশ কমান্ডের নেতৃত্বে রাশিয়ার সেনাসদস্যদের সঙ্গে এতদিন বেশ ভালোভাবেই মিলেমিশে যুদ্ধ করছিল পিএমসি ওয়াগনার। তবে গত কয়েক মাস ধরেই ভাসা ভাসা ভাবে ইউক্রেনের বিভিন্ন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধাদের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের খবর আসছিল।
শুক্রবার এক অডিওবার্তায় ইয়েভগেনি প্রিগোজিন জানান, রুশ সেনারা ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধাদের ওপর ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে এবং সেই হামলায় ইতোমধ্যে গ্রুপের ২ হাজার যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এই হামলার জন্য রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং রুশ বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গারিসিমভকে সরাসরি দায়ী করে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহের ঘোষণা দেন তিনি।
সেই সঙ্গে ওয়াগনার প্রধান আরও বলেন, এই হামলার উপযুক্ত জবাব দিতে গ্রুপের ২৫ হাজার যোদ্ধা নিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া সীমান্ত থেকে মস্কোর পথে রওনা হয়েছেন তিনি।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার জাতির উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সেখানে তিনি একবারও পিএমসি ওয়াগনার ও তার শীর্ষ কমান্ডার ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের নাম উল্লেখ না করে বলেছেন, বিদ্রোহের এই ঘোষণার মাধ্যমে রাশিয়া ও রুশ জনগণকে পেছন থেকে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।
সূত্র : এএফপি
