ঢাকাঃ আরব সাগরের দিক থেকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’। এটা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। আগামী ৩৬ ঘণ্টায় আরও শক্তিশালী হতে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। পূর্ব-মধ্য এবং সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব আরব সাগরের ওপর অবস্থান করছে এই ঝড়। ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ এ তথ্য দিয়েছে।
শুধু ভারত নয়, পাকিস্তানের করাচিতেও তাণ্ডব চালাতে পারে ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। এটা এই মুহূর্তে ১১৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সাইক্লোনটি ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করবে। ভারত, পাকিস্তান ছাড়াও ওমান ও ইরানেও এই ঘূর্ণিঝড়ের জেরে প্রবল বৃষ্টিপাত হবে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ইতোমধ্যেই ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে ভারতের কর্নাটক, গোয়া ও মহারাষ্ট্র রাজ্যের উপকূলে। ১০ জুন পর্যন্ত বইবে এ দমকা হাওয়া।
আবহাওয়াবিদদের আশঙ্কা ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের গতিবেগ পৌঁছতে পারে প্রতি ঘণ্টায় ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত। বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে ১৪৫ থেকে ১৫৫ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা।
মধ্য ও দক্ষিণ আরব সাগরের তীরবর্তী কেরালা, কর্নাটক এবং গোয়াতে এই ঝড়ের প্রভাব সবেচেয়ে বেশি পড়বে বলে জানা গেছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হবে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, কেরালা, দক্ষিণ কর্নাটক, মণিপুর, মিজোরাম, আসাম, মেঘালয় এবং অরুণাচল প্রদেশে। আগামী তিন থেকে চার দিন এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব চলবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতে। এমনটাই জানাচ্ছে হাওয়া অফিস। এছাড়াও ১০ জুন বৃষ্টিতে ভাসবে মুম্বাই।
আবহাওয়াবিদদের একাংশের অনুমান এই ঘূর্ণিঝড়টির গুজরাট উপকূলেই আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সাইক্লোন মোখার গতিবেগকেও হার মানাতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়টি।
এদিকে পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, কিছুটা দিক পরিবর্তন করে সর্বশেষ ১২ ঘণ্টায় ধীরগতিতে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে সরেছে। বর্তমানে ঝড়টি ১৪ দশমিক ৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে এবং ৬৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি পূর্ব দাঘ্রিমাংশে এবং করাচি শহরের দক্ষিণ দিক থেকে ১ হাজার ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
ঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৩০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার এবং মূলকেন্দ্রে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার।
এছাড়া আবহাওয়ার যে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিরাজ করছে সেটি ঘূর্ণিঝড়টির শক্তি আরও বাড়ার ক্ষেত্রে আদর্শিক বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তর আরও জানিয়েছে, উপরিভাগের বাতাসের পরিবর্তনের কারণে, ঘূর্ণিঝড়টির গতিপথ সম্পর্কে নিশ্চিত ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। কেউ বলছেন ঝড়টি ওমান-পাকিস্তানের পূর্ব উপকূলের দিকে যাবে। আবার কেউ বলছেন ঝড়টি আসবে ভারতের গুজরাট এবং পাকিস্তানের সিন্ধ উপকূলে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব
ঘূর্ণিঝড়টি শেষ না হওয়া পর্যন্ত আগামী ১২ জুন সোমবার থেকে জেলেদের মাঝসমুদ্রে না যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কারণ সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে উপকূলীয় উঁচু ঢেউয়ের কারণে সাগরের পরিস্থিতি খারাপ বা খুবই খারাপ হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে আগামী ১৩ জুন রাত থেকে ১৪ জুন সকাল পর্যন্ত সিন্ধ-মাকরান উপকূলে বজ্রবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাস বইতে পারে।
এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২৫ থেকে ২৮ ফুট উচ্চতার ঢেউয়ের সৃষ্টি হতে পারে।
সূত্র: জিও নিউজ
বুইউ