রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমার সরকারকে বর্তমান আইনি ধারা পরিবর্তন করে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে জোর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াংহি লি।
মঙ্গলবার (১০ মার্চ) জেনেভায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তিনি। জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জাতিসংঘের বিশেষ দূত বলেন, ২০১৪ সালে যখন আমি বিশেষ দূতের দায়িত্ব গ্রহণ করছিলাম, আমি মনে করেছিলাম ২০২০ সালের মধ্যে মিয়ানমারে অধিকার ও গণতন্ত্রকে সম্মান দেখানো প্রতিস্থাপন হবে। কিন্তু তা হয়নি। যেখানে রাষ্ট্রের মানবাধিকার সুরক্ষার কথা ছিল, সেখানে আমি দেখেছি ক্রমাগত অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। দেশটির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে সবচেয়ে বড় অপরাধের অভিযোগও আনা হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে পরিবর্তন আনতে একটি দেশের জন্য এখনো বেশি দেরি হয়ে যায়নি।
ইয়াংহি লি মিয়ানমারে এমন একটি জাতীয় সংলাপ আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। যেখানে সবার অংশগ্রহণে মানবাধিকার এবং চলমান বৈষম্যকে তুলে ধরা হবে। মিয়ানমারের সরকার ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে বেসামরিক নেতৃত্বের অধীনে নিয়ে আসার বিষয়েও জোর দিয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে তিনি ব্যাপক সংস্কারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলোকে আধুনিকায়ন করার আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে প্রতিষ্ঠানগুলো বৈষম্যহীনভাবে মানুষকে সেবা দিতে পারে।
লি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতির অবসানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমার গণতন্ত্রের দিকে এগিয়ে যেতে পারে। যে অপরাধীরা মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ করেছে, তাদের অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসতে হবে। মিয়ানমার সরকারকে বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের মাধ্যমে এ দায়িত্ব অবশ্যই নিতে হবে, যাতে বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করার পাশাপাশি জবাবদিহিতার বাধা দূর এবং আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী বিচারিক ও তদন্তের দক্ষতা তৈরি করতে পারে।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পান ইয়াং হি লি। ২০১৭ সালের আগে তিনি মিয়ানমারে বছরে দুবার করে সফর করেছেন। তবে পরে তিনি একাধিকবার মিয়ানমার সফর করতে চাইলেও অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার। আগামী এপ্রিলে তার দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হচ্ছে।
আগামীনিউজ/ইমরান/হাসি