উত্তর প্রদেশের মতো দিল্লিতেও সহিংসতার ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের কাছ থেকে সরকারি সম্পত্তি ধ্বংস ও ভাঙচুরের ক্ষতিপূরণ আদায় করবে পুলিশ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দিল্লি পুলিশের দুই কর্মকর্তা হিন্দুস্তান টাইমসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই ক্ষতিপূরণ আদায়ে জরিমানা বা সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে।
খবরে বলা হয়েছে, ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি নির্দেশনা ক্রাইম ব্রাঞ্চের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমস (এসআইটি) ও স্থানীয় পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে জন প্রশাসন ও দিল্লি সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করার কথা বলা হয়েছে বলে জানিয়েছে এক কর্মকর্তা।
এসআইটিকে টানা চারদিন ধরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট বা সম্পত্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। পুলিশ ধারণা করছে, স্থানীয় বেশ কিছু অপরাধী এতে জড়িত রয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা অন্তত ১ হাজার সহিংসতাকারীকে চিহ্নিত করেছে। এদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬৩০ জনকে আটক ও গ্রেফতার করা হয়েছে।
রবি থেকে বুধবার পর্যন্ত কয়েকশ কোটি রুপি মূল্যের সম্পত্তি ধ্বংস করা হয়েছে বলে ধারণা করছে দিল্লি পুলিশ।
এর আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভের সময় সহিংসতার পর উত্তর প্রদেশ সরকার অন্তত ৪০০ জনকে চিহ্নিত করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নোটিশ দিয়েছে। এই নির্দেশের পক্ষে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টের পুরনো সুপারিশ ও ২০১১ সালের এলাহাবাদ হাই কোর্টের নির্দেশের কথা তুলে ধরেছে।
দিল্লি দমকলবাহিনী শুক্রবার ৭৯টি বাড়ি, ৫২টি দোকান, ৫টি গোডাইন, ৩টি কারখানা, ৪টি মসজিদ ও ২টি স্কুল সহিংসতায় পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে। তাদের আশঙ্কা এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
উল্লেখ্য, ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরুদ্ধে মুসলিমদের বিক্ষোভের ঘটনায় বরাবরই ক্ষুব্ধ দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। দিল্লির বিধানসভা নির্বাচনেও মুসলিমবিদ্বেষী তোপ দাগেন দলটির নেতারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথসহ বহু নেতা ঘৃণাবাদী বক্তব্য দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত রবিবার সহিংসতায় উসকানি ছড়ান দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র। এরপরই দিল্লির উত্তর-পূর্ব অংশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে শুরু হয় নজিরবিহীন তাণ্ডব। শুক্রবার পর্যন্ত এই সহিংসতায় ৪২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। হাসপাতাল সূত্রে আশঙ্কা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। কেননা, আহতদের মধ্যে অনেকেই এখনও ঝুঁকিমুক্ত নয়। দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছেন অনেকে।
আগামীনিউজ/হাসি