চীনের উহানে উৎপত্তি হওয়া করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ‘অত্যন্ত মারাত্মক’ আকার ধারণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দেশটিতে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রাণকেন্দ্র দায়েগু শহর পরিদর্শনে গিয়ে একথা বলেন তিনি। খবর এএফপি’র
নতুন করে আরও ১৪৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায় মোট আক্রান্তে সংখ্যা ৯৭৭ জনে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছে কোরিয়া সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (কেসিডিসি)। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশে এই ভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর দেশটির বাইরে সর্বোচ্চসংখ্যক আক্রান্ত এখন দক্ষিণ কোরিয়ায়।
ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ায় বিশ্বের ১২তম বৃহৎ অর্থনীতির এই দেশটিতে বেশ কিছু ইভেন্ট বাতিল করা হয়েছে। বাতিলের এই তালিকায় আছে বিশ্ব টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতা, কে-লীগ ফুটবলসহ দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশনও।
করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রায় ৮০ শতাংশই দক্ষিণ কোরিয়ার চতুর্থ বৃহত্তম দায়েগু শহর এবং প্রতিবেশি নর্থ জিওংস্যাং প্রদেশের বাসিন্দা। দায়েগু শহরের একটি হাসপাতালে গিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদের জরুরি ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে ইন বলেন, পরিস্থিতি খুবই মারাত্মক। তবে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সব ধরনের সরকারি সহায়তার ঘোষণা দেন তিনি।
মুন জায়ে ইন বলেন, এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা বিজয় অর্জন করবোই।
গত কয়েকদিন ধরে ২৫ লাখ মানুষের শহর দায়েগুর রাস্তাঘাট যেন জনমানবশূন্য বিশাল মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। তবে শহরটির অল্প কিছু দোকানপাট খোলা রয়েছে; যেখানে শুধুমাত্র মাস্ক বিক্রি হচ্ছে। শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা অথবা জ্বর দেখা দিলে লোকজনকে অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে বাড়িতে থাকার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে দেশটির পার্লামেন্টের অধিবেশনে অংশ নেয়া এক ব্যক্তির শরীরে করোনার উপস্থিতি পাওয়ার ঘটনায় মঙ্গলবারের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। দেশটির সরকারি বিমান পরিবহন সংস্থা কোরিয়ান এয়ারের এক কেবিন ক্রু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে ওই ক্রুর ব্যাপারে বিস্তারিত কোনও তথ্য দেয়নি কোরিয়ান এয়ার।
মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র দেশটির নাগরিকদের দক্ষিণ কোরিয়ায় অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে কাউকে নিজেদের ভূখণ্ডে ঢুকতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে হংকং। মঙ্গলবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সব ধরনের বিমান চলাচল স্থগিত করেছে মঙ্গোলিয়া।
বিশ্ব টেবিল টেনিসের আয়োজকরা বলছেন, মার্চে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে এবারের আসর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে জুনে করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কেসিডিসি বলছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট দশজনের প্রাণ গেল।
আগামীনিউজ/মামুন