গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে) অন্তর্বর্তী আদেশ দিয়েছেন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার করা মামলায়। এবার এই দুই দেশকে তাদের আইনি যুক্তি দাখিলের জন্য সময় বেঁধে দিয়েছেন আইসিজে।
মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিজে জানিয়েছেন, গাম্বিয়াকে আগামী ২৩ জুলাইয়ের মধ্যে তাদের অভিযোগের বিষয়ে আইনি যুক্তিগুলো উপস্থাপন করতে হবে। অন্যদিকে আগামী বছর ২৫ জানুয়ারির মধ্যে মিয়ানমারকে নির্দোষ প্রমাণে যুক্তি উপস্থাপন করতে হবে।
গত সপ্তাহে আইসিজে অন্তর্বর্তী আদেশে রোহিঙ্গাদের সুরক্ষায় মিয়ানমারকে জরুরি ভিত্তিতে চার দফা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানায়। সেই চার দফা হলো-
১. রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের হত্যা বা হত্যার চেষ্টা, তাদের শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি করার চেষ্টা, তাদের জীবনযাপনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এমন কোনো পদক্ষেপ কিংবা ওই জনগোষ্ঠীর জন্মহার কমানোর যেকোনো ধরনের চেষ্টা বন্ধের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা মিয়ানমারকে অবশ্যই নিতে হবে।
২. মিয়ানমারের সেনাবাহিনী বা কোনো সশস্ত্র গ্রুপ যেন এমন কোনো কর্মকাণ্ড না ঘটায় যা গণহত্যা বা গণহত্যার ষড়যন্ত্রের অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
৩. গণহত্যার অভিযোগের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো আলামত ধ্বংস করা যাবে না, বরং সেগুলো যাতে যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়, তা মিয়ানমারকে নিশ্চিত করতে হবে।
৪. এই আদেশের ভিত্তিতে মিয়ানমার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে এই আদেশ হওয়ার চার মাসের মধ্যে আইসিজেতে প্রতিবেদন দিতে হবে। তারপর আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসার আগ পর্যন্ত প্রতি ছয় মাস পরপর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে হবে।
আইসিজের অন্তর্বর্তী আদেশে এই মামলায় প্রাথমিক জয় হয় গাম্বিয়া ও বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১১ লাখ রোহিঙ্গার।
গত বছর ডিসেম্বরে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া মামলাটি করেছিল। ওই মাসেরই ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর হেগে মামলার শুনানিতে নিজ দেশের হয়ে লড়েছিলেন মিয়ানমারের বিতর্কিত নেত্রী অং সান সু চি। অন্যদিকে গাম্বিয়ার পক্ষে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন দেশটির বিচারমন্ত্রী আবুবকর তামবাদু।
আগামীনিউজ/ হাসি/এনএনআর
