ঢাকাঃ কথায় বলে ‘‘ঝোঁকে বাঙালী’’ অতীব সত্য কথা। ঝোঁকে বাঙালী কথাটি মানুষ নেতিবাচক অর্থে নিলেও আমার কাছে এর ব্যাখ্যা ভিন্ন। পৃথিবীর সবচেয়ে সহজ সরল, বিশ্বাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে বাঙালী সর্বোত্তম বলেই আমি মনে করি।
আমরা বাঙালী এতই সহজ সরল যে, যে যা কিছু বলে আমরা তা সহজেই সরল মনে বিশ্বাস করি। প্রসংগ ছিল- মরিংগা
যার উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম হলো- Moringa Oleifera
ইংরেজীতে বলা হয় Drum Stick আর বাংলা - সজিনা বা সাজনা। সাজনা বলতে আমরা এই গাছের ড্রাম বা লাঠি সদৃশ যে ফল দেখি সেটাই তরকারী হিসেবে খাদ্যে ব্যবহার হয়। কিন্তু খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানী, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী, রসায়নবিদসহ দেশীয় ও আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা কর্তৃক গবেষণায় দেখা গেছে যে, সজিনার পাতায় রয়েছে বহুবিধ পুষ্টি ও ঔষধি গুণাগুণ যা পৃথিবীর অন্য কোনো খাদ্যে নেই। তাই সজিনার পাতার গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়েই একে আখ্যায়িত করা হয়েছে- Super Food হিসেবে।
সজিনার এই বহুবিধ পুষ্টি উপাদান ও ঔষধি গুণাগুণের কথা বিভিন্ন মিডিয়ায় বিশেষ করে ইউটিউব, ফেসবুক, টিভি চ্যানেল ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রচারণায় বিশ্বাস করে মানুষ মরিংগার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। যেভাবে এক সময় মানুষ ঝুঁকেছিল জিংসেংয়ের দিকে!
মরিংগা খাওয়ার আগে যে বিষয়গুলো ভালভাবে জেনে-বুঝে তারপর খাবেন।
বিষয়গুলোঃ
১. আমাদের জানামতে ১০৪ প্রজাতির মরিংগার সন্ধান পাওয়া গেছে। এখন পর্যন্ত তার মধ্যে মাত্র ১৩ (তের) প্রজাতির মরিংগা বা সাজনা পাওয়া যায় আমাদের দেশসহ ভারত উপমহাদেশে আর এর মধ্যে মাত্র ১টি প্রজাতির মরিংগার পাতা সুপারফুট হিসেবে চিহ্নিত। যার বোটানিক্যাল নাম হলো সুপারফুট।
২. Moringa Oleifera হলেও তা কোন পদ্ধতিতে উৎপাদিত হয়েছে।
৩. কোন পদ্ধতিতে তা প্রসেস ও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
৪. সার্বিক পুষ্টিগুণের নিশ্চয়তা আছে কিনা।
৫. সঠিক সময়ে উদ্ভিদটি আহরণ করা হয়েছে কিনা?
৬. যারা বিক্রি করছে তারা কোথা থেকে সংগ্রহ করছে।
৭. কোন ল্যাব সার্টিফিকেট বা ক্যামিকাল এনালাইসিস আছে কিনা?
বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়েই মরিংগা খেতে হবে। এর সাথে সাথে মনে রাখতে হবে মরিংগা বেশী জন্মায় শিল্প কারখানা ও রাস্তার আশে-পাশে বা ক্ষেতের আঁইলে। কারখানার ক্ষতিকর কেমিক্যাল রাস্তার গাড়ির পেট্রোকেমিক্যাল ও হেভি মেটাল, ক্ষেতে প্রয়োগ করা রাসায়নিক সবই শোষণ করে এই গাছ। তাই এসব গাছ থেকে পাতা নিয়ে তা খেলে ক্যানসারের ঝুঁকিতো থেকেই যায়।
বুইউ