ঠাকুরগাঁওয়ে পাটের আবাদ বাড়ছে। বাংলাদেশের এক কালের প্রধান অর্থকরী ফসল সোনালী আঁশ হিসেবে পরিচিত পাট কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছিল। বিগত সময়ের সোনালী আঁশের সোনার বাংলার ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে নতুনভাবে পাট চাষ শুরু করছে ঠাকুরগাঁয়ের কৃষকরা। বর্তমানে অন্যান্য ফসলের তুলনায় পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে পাট চাষ দিনদিন বাড়ছে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৯৬০ হেক্টর। পাট আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৮১২ হেক্টর। গতবার আবাদ হয়েছিল ৫ হাজার ৮৬০ হেক্টর। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় আবাদ হয়েছে ১ হাজার ২শ২২ হেক্টর। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় পাট আবাদ হয়েছে ১হাজার ৬১০ হেক্টর জমিতে। রানীসংকৈল উপজেলায় পাট আবাদ হয়েছে এক হাজার ১শ হেক্টর জমিতে। পীরগঞ্জ উপজেলায় পাট আবাদ হয়েছে ১ হাজার হেক্টর জমিতে। হরিপুর উপজেলায় পাট আবাদ হয়েছে ৮৮০ হেক্টর জমিতে। ঠাকুরগাঁওয়ে এবার বিভিন্ন জাতের পাট চাষ হয়েছে, এ অঞ্চলের কৃষকরা দেশি, তোষা, মেশতা ও উচু মাটিতে কেনাফ এইচ বি-৯৫ জাতের পাট আবাদ করছে।
অপর দিকে চলতি মৌসুমের শুরুতেই ধানের বাজার ভালো থাকায় হতাশার মাঝেও আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন এ জেলার চাষিরা। চড়া দামে বীজ সার, কীটনাশক ও মজুর দিয়ে ধান চাষ করে কাটার পর কৃষক পাচ্ছেন ধানের ন্যায্যমূল্য। তাই এবার পাটের ও নায্য দাম প্রত্যাশী।
সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের কৃষক মো. বাবুল বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করছি। এতে আমার প্রায় কুড়ি হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। আশা করি গতবারের ন্যায় এবারও পাটের ভালো দাম পেলে লাভবান হব।
একই গ্রামের কৃষক দুলাল, আব্দুর রাজ্জাক, মজিবরসহ একাধিক কৃষক বলেন, পাটে খরচ ও পরিশ্রম বেশি। তাই এবার প্রতি মণ পাট ২০০০ টাকার নিচে বিক্রি হলে লাভ হবে না। তখন কষক পাট আবাদ ছেড়ে দিবে।
ঠাকুরগাঁও কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আফতাব হোষেন বলেন, সার, বীজের, তেমন কোনো সমস্যা ছিল না। পোকার আক্রমণও পাটের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি, ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আশাকরি এবার এ জেলায় গত বছরের চেয়ে বেশি পাট উৎপন্ন হবে।
আগামীনিউজ/শামসুল/জেএফএস