জয়পুরহাটে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সুস্বাদু ও পুষ্টিকর বিদেশি জাতের ফল স্ট্রবেরি। জেলা সদরের জামালপুর ও আক্কেলপুর উপজেলার জামালগঞ্জ এখন স্ট্রবেরি ভিলেজ হিসেবে দেশের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জেলার প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করলে খরচ হয় ১ লাখ ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা। সেখানে খরচ বাদ দিয়ে লাভ হচ্ছে ৫০-৬০ হাজার টাকা। ফলে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ঝুঁকছেন স্ট্রবেরি চাষের দিকে।
কৃষক আব্দুল খালেকের সফলতা দেখে একই এলাকার চার শিক্ষিত বেকার যুবক হামিদ, ওয়াদুদ, বাবু, রবিউল কোনো প্রকার ব্যাংক ঋণ বা সরকারি কোনো সহযোগিতা ছাড়াই শুধু নিজেদের উদ্যোগে প্রায় ১০ বিঘা জমি বর্গা নিয়ে চারা সংগ্রহ করে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। সে বছর খরচসহ স্ট্রবেরি চাষে তাদের ব্যয় হয়েছিল প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকা এবং তারা লাভও করেন ১৭ লাখ টাকা। সেই থেকে এ এলাকায় স্ট্রবেরি চাষের বিপ্লব শুরু হয়।
নভেম্বর মাস স্ট্রবেরি চাষের উপযুক্ত সময়, জানুয়ারিতে ফল ধরে এবং ফল তোলার কাজ চলতে থাকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত। প্রতিদিন এ অঞ্চলের বিভিন্ন জমি থেকে ৫ হাজার ২০০ কেজি ও ৫ হাজার ৫০০ কেজি স্ট্রবেরি ৬০-৭০ টাকা দরে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। স্ট্রবেরি চাষ বৃদ্ধির ফলে এলাকায় ব্যাপক কর্মসংস্থানেরও সৃষ্টি হয়েছে। এমন ঈর্ষণীয় সাফল্যে জেলার বিভিন্ন স্থানে এই ফল চাষ ছড়িয়ে পড়ছে।
স্ট্রবেরি চাষি আহসান কবীর এ্যাপ্লব ও রাজেশ কুমার জানান, ফলনের প্রথম দিকে স্ট্রবেরি কেজি প্রতি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পাইকারি বিক্রি হলেও ফলন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার না থাকায় স্ট্রবেরি কেজি প্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি করতে হয়। এতে লোকসান না হলেও বেশি লাভ থাকছে না।
জামালপুরের স্ট্রবেরি চাষি কৃষক হামিদ, বাবুসহ অনেকে জানান, সঠিক বাজার সৃষ্টি করা গেলে স্ট্রবেরি চাষে কৃষকদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলা সম্ভব।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, আবহাওয়া স্ট্রবেরি চাষের বেশ উপযোগী। তাছাড়া অধিক লাভজনক আর দেশ বিদেশে প্রচুর চাহিদা থাকায় এর চাষ সম্প্রসারণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও দাবি কৃষি বিভাগের।
জয়পুরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক এজেড এম ছাব্বির ইবনে জাহান জানান, বর্তমানে এ অঞ্চলে-ফেস্টিভ্যাল হাইব্রিড, রাবি-৩ ও কামারুশা এই তিন জাতের স্ট্রবেরির চাষ হচ্ছে। জয়পুরহাটের স্ট্রবেরি এক দিন দেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা যায়।
আগামীনিউজ/হাসি