দেশের উত্তরের প্রান্তিক জেলা পঞ্চগড়ে এবছর গমের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হওয়ায় লাভবান হওয়ার স্বপ দেখছেন চাষিরা। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে কৃষি বিভাগ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় এবছর ২০ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিত গমের চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ৮৩ হাজার ৫০০ টন গম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে । কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে উন্নতজাতের বারি গমের বীজ, সার ও বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ বিতরণ করেছে। এছাড়াও চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায় , সমতলের সবুজ চায়ের অঞ্চলে এবার মাঠে বাতাসে দোল খাচ্ছে গমের সোনালি শীষ। আবার কোথাও কোথাও গম কাটা হচ্ছে হারভেস্ট্রার মেশিনে। চাষিরা মেশিনে গম কেটে মাঠ থেকেই ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবার গমের বাম্পার ফলন হওয়ায় প্রতি বিঘা থেকে ৩০-৩৫ মণ গমের উৎপাদন মিলবে। গমের ন্যায্য মূল্য পেলে এ আবাদ থেকে অধিক লাভবান হবেন বলে আশা করছেন চাষিরা।
চাষিরা জানান, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি ও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে গম চাষে বেশি ঝুঁকেছেন তারা। গম চাষে সেচ, সার, কীটনাশক ও বালাইনাশক খরচ অনেক কম। আবার তেমন নিড়ানির প্রয়োজনও হয় না। কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়। এছাড়াও গমে পোকামাকড়ের আক্রমণও বেশ কম। গম চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় চাষিরা এই চাষের দিকে ঝুঁকছেন। কৃষকরা গমের ভাল দাম পাবেন বলে আশা করছেন।
গম চাষিরা আরও জানান, এ বছর আবহাওয়া ঠিক থাকায় গমের আবাদ ভাল হয়েছে। গমের ন্যায্য দাম পেলে লাভবান হব বলে আশা করছি।
তেঁতুলিয়া উপজেলার বাবুয়ানিজাত গ্রামের গম চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, গতবারের মতো এবারও গম চাষ করেছি। এবছর দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি। গম কাটা শুরু হয়েছে। আশা করছি ভাল দাম পাব। তবে ভাল দাম পেলে আগামীতেও আরও বেশি জমিতে গমের আবাদ করব।
পঞ্চগড় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহ্ আলম মিয়া বলেন, পঞ্চগড়ে এবার গমের ভাল ফলন হয়েছে। মাঠে গম কাটা শুরু হয়েছে। চাষিদের ইতিমধ্যে ৫০ ভাগ গম কাটা হয়ে গেছে । এবার ২০ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিত গমের চাষ হয়েছে। এখান থেকে প্রায় ৮৩ হাজার ৫০০ টন গম উৎপাদন হবে আশা করা হচ্ছে । কৃষকরা লাভবান হবেন।
এসএস