ঢাকাঃ করোনা মহামারির কারণে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা গত তিন বছর ধরে সঠিক সময়ে নেওয়া যাচ্ছে না। তবে আগামী বছর থেকে দেশের সবচেয়ে বড় এই দুটি পাবলিক পরীক্ষা যথাসময়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। মন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে এসএসসি ফেব্রুয়ারি মাসে এবং এইচএসসি এপ্রিল মাসে নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) সকালে এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনে রাজধানীর তেজগাঁও কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে গত দুই-তিন বছর আমাদের একাডেমিক ক্যালেন্ডার একটু এলোমেলো হয়েছে। আগামী বছর থেকে এটা ঠিক হয়ে যাবে আশা করি। আগামী বছর আমরা চেষ্টা করবো এইচএসসি পরীক্ষা এপ্রিলে এবং এসএসসি পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে নেওয়ার। সে অনুযায়ী ক্লাসে পাঠদান করানো হবে।
বিলম্বিত এইচএসসি পরীক্ষা এবারই শেষ জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, আমরা পরীক্ষার ফল ৬০ দিনের মধ্যেই প্রকাশ করব, ইনশাআল্লাহ। যাদের আগে পরীক্ষা শুরু হয়েছে, তাদের তো ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশিত হবে। আর যাদের দেরিতে শুরু হবে, তাদের ফলও ৬০ দিনের মধ্যে শেষ করার চেষ্টা করছি।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ডেঙ্গু মহামারি বাড়লেও ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। সব পরীক্ষা কেন্দ্রেই ডেঙ্গু আক্রান্ত পরীক্ষার্থীর জন্য চিকিৎসাসহ বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণে পরীক্ষাদের আসতে ভোগান্তি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সময়টা সমন্বয় করলে ভালো হতো। কিন্তু দুইবেলা পরীক্ষা থাকলে পরীক্ষার সময় পরিবর্তনে ঝামেলা হয়ে যায়। এসএসসি পরীক্ষায় সময় পরিবর্তন করে দেখেছি৷ তখন এ সমস্যাটা দেখা গেছে।
বিভিন্ন কেন্দ্রে অবব্যস্থাপনা ও কেন্দ্রের সামনে সিট প্লান না থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা সাধারণত দেখে থাকি কেন্দ্রের গেটেই অভিবাকরা ভিড় জমান, তারা পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে ঢুকিয়ে সঙ্গে সঙ্গে যদি একটু দূরে থাকেন তাহলে এ সমস্যা হতো না। দেখা যায়, একটু পরে যেসব শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন তাদের কেন্দ্রে প্রবেশ করতে খুব কষ্ট হয়। আমি অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করবো আপনারা আপনার সন্তানকে কেন্দ্রে নামিয়ে একটু দূরে চলে যান। সেখানে বসে দোয়া করতে থাকুন।
এবার প্রশ্নফাঁসের ঝুঁকি নেই দাবি করে মন্ত্রী বলেন, প্রতিবছর প্রশ্ন ফাঁসকারীরা অভিনব কায়দা বের করে। আমাদের নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়। প্রত্যেক বার যা যা ঘটে আমরা কিন্তু তা ভুলে যাই না। সেসবের জন্য যা যা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার তা আমরা করি। আশা করি এবার নতুন কিছু ঘটবে না। নতুন-পুরাতন কোনো সমস্যা এবার থাকবে না -এজন্য সব ধরনের প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এরপরও আমাদের চোখ-কান খুলে রাখতে হবে। সব কেন্দ্রে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। গত পাঁচ বছরে কোনো পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়নি, তারপরও একটি মহল সবসময় গুজব ছড়িয়ে আসছে। এখন সেই গুজব কমেছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা সচিব সোলেমান খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমদ, আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকারসহ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তারা।
বুইউ