ঢাকাঃ করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের সিলেবাসের ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমানো হচ্ছে। অক্টোবরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে অসমাপ্ত সিলেবাসের ৭০ শতাংশ, নভেম্বরে খুললে ৬০ শতাংশ পড়ানোর পরিকল্পনা তৈরি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
জানা গেছে, কোভিড-পরবর্তী শিক্ষা কার্যক্রমের নীতি-কৌশলের খসড়া চূড়ান্ত করতে আজ মঙ্গলবার মন্ত্রণালয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক ডাকা হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাস ধরে তৈরিকৃত পরিকল্পনা-২ ও পরিকল্পনা-৩ আজকের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে।
এনসিটিবি সূত্র জানায়, নিম্ন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের করোনা-পরবর্তী শ্রেণি কার্যক্রমের জন্য তিনটি বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর সম্ভাব্য কর্মদিবস ধরে তৈরি করা হয়েছে এ প্রস্তাব। সে অনুযায়ী সর্বনিম্ন ৩০ দিন শ্রেণি কার্যক্রম চালানো সম্ভব হলে পাঠ্যবইয়ের কতটুকু অংশ পড়ানো হবে, তা চিহ্নিত করা হয়েছে। এছাড়া ৫০ এবং ৩০ কর্মদিবস সময় পেলে কতটুকু পড়ানো যাবে, তাও চিহ্নিত করা হয়েছে।
এদিকে করোনা পরিস্থিতিতে স্কুল-কলেজে ছুটি আরও বাড়াতে পারে সরকার। মঙ্গলবারের (২৫ আগস্টের) পর এ বিষয়ে ঘোষণা দেয়া হতে পারে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, স্কুল-কলেজে আগামী ৩১ আগস্ট বর্তমান ছুটি শেষ হবে। নতুন করে আরও ১৫ দিন ছুটি বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা এবং কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিবসহ বিভাগীয় প্রধানদের ভার্চুয়াল সভা হয়েছে।
এর আগে গত রবিবার (২৩ আগস্ট) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেন বলেন, আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ব্যাপারে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে মাদরাসাগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে করোনা পরিস্থিতিতে আটকে থাকা ডিগ্রি ও মাস্টার্স পর্যায়ের পরীক্ষাগুলো নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকের ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব এ তথ্য জানান। পরীক্ষা নেয়ার অনুমতি দেয়া হলেও কিতাব বিভাগে ক্লাস চালুর অনুমতি দেয়নি সরকার।
এর আগে গত ১৭ আগস্ট কিতাব বিভাগের কার্যক্রম চালু ও পরীক্ষা নেয়ার সুযোগ করে দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়েছিল কওমি মাদরাসাগুলো।
জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের সহ-সভাপতি ড. মাওলানা মুশতাক আহমদ জানান, কওমি মাদরাসা খোলার অনুমতি দেয়া হয়েছে। এখন থেকে পরীক্ষা নেয়া যাবে। ঘন্টাখানেকর মধ্যে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে। এইমাত্র মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে বিষয়টি জাতীয় দ্বীনি মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের প্রতিনিধি দলকে জানানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা মহামারীর কারণে দেশের প্রায় ২২ হাজার কওমি মাদ্রাসার ২৫ লক্ষাধিক শিক্ষার্থী গত শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা দিতে পারেনি। ঈদুল ফিতরের পর কওমি মাদ্রাসাগুলোর নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরু হলেও করোনার কারণে তা স্থগিত রাখা হয়। এরও আগে ১ জুন দেশের কওমি মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রী ভর্তির কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অফিস খোলার অনুমতি দেয়া হয়।
আগামীনিউজ/এএইচ