বরগুনাঃ উপকূলীয় বরগুনার বেতাগীতে দিন দিন বাঁশ ও বেতের তৈরি পণ্যের কদর কমে যাওয়ায় ঐতিহ্য হারাতে বসেছে এই শিল্প। এখানকার মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে বেত ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করা হলেও আধুনিক জীবনধারায় যথেচ্ছা প্লাস্টিকের ব্যবহারে তা এখন বিলুপ্তির পথে।
যেখানে এক যুগ আগেও দের লাখ জনসংখ্যা অধ্যুষিত এ পৌরসভা সহ এ উপজেলা ৭টি ইউনিয়নে ৫ শতাধিকের উপরে পরিবার এ পেশায় সম্পৃক্ত ছিল। বাঁশ-বেত দিয়ে তারা তৈরি করতো গৃহস্থালী ও সৌখিন নানা পণ্যসামগ্রী। বাড়ির আশেপাশের ঝাড় থেকে তরতাজা বাঁশ-বেত কেটে গৃহিনীরা তৈরি করতেন হরেক রকমের পণ্য। এসব বিক্রি করেই চলতো তাদের জীবনযাপন। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ক্ষুদ্র এ পেশাজীবীদের অধিকাংশ এখন আদি পেশা বদল করে কৃষিসহ নানা পেশায় জড়িয়ে পড়ছে।
বুধবার সাপ্তাহিক হাঁটের দিন পৌরবাজারে বাঁশ-বেত তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসা অতীশ চন্দ্র বলেন, বেত শিল্পের দুর্দিনে এখানে এখন হাতে গোনা কিছু সংখ্যক পরিবার বেতশিল্পকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন। অনেকে এ পেশা বদলে অন্যপেশায় গেলেও পূর্বপুরুষের হাতেখড়ি পেশাকে কিছুতেই ছাড়তে পারেননি তারা। তাদের তৈরি কিছু পণ্য পৌরবাজারসহ গ্রাম-গঞ্জে নিয়ে ঘোরাফেরা করলে কিছু সৌখিন মানুষরা তাদের পণ্য কিনেন।
দেবী রানী নামের আরেক নারী কারিগর বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই বাঁশ শিল্প টিকিয়ে রাখতে ধার-দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি লাভ দিয়ে টাকা নিয়ে কোন রকমে টিকে আছি। আমাদের এই শিল্পটির উন্নতির জন্য সরকারীভাবে অল্প লাভে ঋণ দেয়া হয় তাহলে এই শিল্পটি টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সুহৃদ সালেহীন বলেন, গ্রামীণ ঐতিহ্য ও এসব ক্ষুদ্র পেশাজীবীদের পুর্নবহালের জন্য আগ্রহীদের মাঝে সহজশর্তে ব্যাংক ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।