গাজীপুরঃ জেলায় কারখানায় চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন এক তরুণীকে ধর্ষণের পর বালু নদীতে ফেলে হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ ঘটনায় জড়িত ওই কারখানার সিকিউরিটি গার্ডকে প্রায় ১৪ মাস পর তার শ্বশুর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুর পিবিআই’র পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেফতারকৃত সোলায়মান আলী (২২) নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার পূর্ব খড়িবাড়ি গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে। সে ইউনিলিভার ফ্যাক্টরীর গাজীপুরের কালীগঞ্জ উলুখোলাস্থিত সেলস ডিপোতে সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন।
পিবিআই’র পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের জানান, গত বছরের ২৩ জুন সকাল ৭টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার মধ্যপানজোরা গ্রামের মৃত তোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে তাহমিনা (২৫)। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। দু’দিন পর অজ্ঞাত হিসেবে তার অর্ধ গলিত লাশ নগরভেলা সাকিনস্থ সাহুরঘাট এলাকার বালু নদী হতে উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায় থানা পুলিশ। পরে লাশটি তাহমিনার বলে শনাক্ত করেন তার বড় বোন জাহানারা। এ ব্যাপারে অজ্ঞাত আসামীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে জানা যায়, ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষনের পর পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি জানান, গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানা পুলিশ মামলাটি ১৪ মাস তদন্ত করে। কোন রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতার করতে না পারায় ঢাকা পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স চাঞ্চল্যকর ও ক্লুলেস এ মামলাটি পিবিআই গাজীপুর জেলাকে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করেন। পিবিআই’র তদন্তকালে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এ ঘটনায় জড়িত আসামী সোলায়মান আলীকে (২২) নীলফামারীর ডিমলা থানাধীন পশ্চিম খড়িবাড়ী এলাকাস্থিত তার শ্বশুর বাড়ী থেকে বৃহষ্পতিবার গ্রেফতার করা হয়।
পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে তাহমিনা হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। শুক্রবার তকে আদালতে সোপর্দ করলে সে নিজেকে জড়িয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্য আসামীদের নাম উল্লেখ করে স্বেচ্ছায় ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। এর প্রেক্ষিতে ক্লুলেস এ ঘটনার প্রায় ১৪ মাস পর চাঞ্চল্যকর মানসিক ভারসাম্যহীন তরুণী তাহমিনা হত্যার রহস্য উন্মোচন হয়েছে।
তিনি আরো জানান, ভিকটিম তাহমিনাকে চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ঘটনারদিন ইউনিলিভার ফ্যাক্টরীর গাজীপুরের কালীগঞ্জ উলুখোলার কেটুনস্থিত সেলস ডিপোর পার্শ্ববর্তী তাদের মেসে নিয়ে যায় সোলায়মানসহ ওই ডিপোতে কর্মরত কয়েক সিকিউরিটি গার্ড। সেখানে সোলায়মান ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে পালাক্রমে ধর্ষন করে। পরবর্তীতে ভিকটিমকে বাসায় পৌঁছে দেয়ার কথা বলে সিএনজি ভাড়া করে উলুখোলা ব্রীজে নিয়ে যায়।
সেখানে আসামীরা ভিকটিমকে উচু করে ধরে ব্রীজের রেলিং এর উপর দিয়ে বালু নদীর পানিতে নিক্ষেপ করে হত্যা করে বলে গ্রেফতারকৃত সোলায়মান স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছে।