গাজীপুরঃ জেলার টঙ্গীতে শিশু গৃহকর্মী ফারজানা আক্তার মিমকে (৯) নির্যাতনের অভিযোগে এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ। নির্যাতনের শিকার শিশু নোয়াখালির সোনাইমুড়ি উপজেলার রাজারামপুর গ্রামের আনিসুর রহমানের মেয়ে।
মঙ্গলবার (১৮ মে) বেলা ১১টার দিকে টঙ্গী মিলগেট এলাকা থেকে ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) টঙ্গী পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উত্তম কুমার এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিশু গৃহকর্মীর বাবা বাদী হয়েটঙ্গী পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
গ্রেফতারকৃত দেলোয়ার (৪০) ও জেসমিন (৩৫) দম্পতি টঙ্গী মিল গেট এলাকায় আবু শাকেরের বাড়িতে ভাড়া থেকে ট্রান্সপোর্ট ব্যবসা পরিচালনা করেতেন।
নির্যাতিতা শিশু গৃহকর্মীর বাবা আনিসুর রহমান জানান, পরিবারে আর্থিক অচ্ছলতার এবং স্ত্রী মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ার কারণে প্রায় দেড় বছর আগে আমার দুসম্পর্কের আত্মীয় সালাহ উদ্দিনের মাধ্যমে আমার মেয়েকে দেলোয়ার-
জেসমিন দম্পতির বাসায় কাজ করার জন্য দেই। বাসার কাজের পাশাপাশি ওই দম্পতি আমার মেয়ের ভরণপোষণ ও লেখাপড়ার চালিয়ে নেওয়ার প্রুতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু, তারা আমার মেয়েকে লেখাপড়া না করিয়ে তাদের বাসার যাবতীয় সাংসারিক কাজ করাইতো। কাজ করতে গিয়ে ছোটখাটো কোনো সমস্যা হলে ওই দম্পতি আমার মেয়েকে শারীরিক নির্যাতন করতো। আমার মেয়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে চাইলে তারা বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে মেয়ের সাথে কথা বলতে দিতো না।
ওই দম্পতির নির্যাতনে মেয়ের শারিরীক অবস্থা খারাপ হলে ঢাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে ঈদের পরদিন শনিবার (১৫মে) তারা আমার গ্রামের বাড়ির পাশে দুসম্পর্কের আত্মীয় সালাহ উদ্দিনের বাড়িতে মেয়েকে রেখে চলে যায়। পরে সালাহ উদ্দিন আমার শ্যালিকাকে ফোন দিয়ে বলে আনিসের মেয়েকে আমার কছে রেখে গেছে। তাকে এসে নিয়ে যেতে বলেন। মেয়েকে পাওয়ার পর তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে কারণ জানতে চাই।
তিনি আরো বলেন, তারা আমার মেয়েকে মেরে মাথা ফাটিয়েছে, কোমড়ের পাঁজরের হাড় ও মুখের দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। মেয়ের গোপনাঙ্গে মরিচের গুঁড়া দিয়ে নির্যাতন করেছে বলে নির্যাতিত শিশু গৃহকর্মী তার বাবাকে জানায়।
টঙ্গী পশ্চিম থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) উত্তম কুমার সুত্রধর জানান, ভিকটিমকে সাথে নিয়ে টঙ্গী মিলগেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে দেলোয়ার-জেসমিন দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। শিশু গৃহকর্মীর শরীরে নির্যাতনের বিভিন্ন আলামত পাওয়া গেছে।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ আলম জানান, নির্যাতিত শিশুকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। শিশুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত আসমীদেরকে দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
