রাজশাহী: পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) সোর্স পরিচয় দিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণা করে অবশেষে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন রাব্বি হাসান (২৮) নামের এক যুবক। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) দুুপরে তাকে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) রাতে বাঘা থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃত রাব্বির বাড়ি জেলার বাঘা উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামে। তার নবজাতক সন্তানের নাম আইজিপি রেখেছেন, এমন কথা বলে বেড়াতেন তিনি। আর এসব কথা শুনে এলাকার কিছু ভুক্তভোগী মানুষ পুলিশি তদবির পেতে ছুটছিলেন প্রতারক রাব্বির কাছে।
জানা গেছে, গত ৪ এপ্রিল রাব্বিসহ চার যুবককে মাদকসেবন করা অবস্থায় উপজেলার খানপুর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তখন আধা বোতল ফেনসিডিল, দুই পিস ইয়াবা বড়ি এবং দুটি দামি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়। বাঘা থানা পুলিশ তাঁদের জেলহাজতে পাঠায়। এ ঘটনার ১৫ দিন পর হাজত থেকে বেরিয়ে আসেন রাব্বি। এরপর একটি দামি মোটরসাইকেল কিনে এলাকায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করেন।
তিনি বলে বেড়াচ্ছিলেন, অনেক পুলিশ কর্মকর্তার সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা আছে। বাঘার খানপুর গ্রামের বাসিন্দা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রোকনুজ্জামান রিন্টু এবং গড়গড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম রবি জানান, তাঁদের এলাকা থেকে গত ৪ এপ্রিল রাব্বিসহ যে চারজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছিল তাঁরা প্রত্যেকেই মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী। এলাকায় বিকাশ হ্যাকার হিসাবেও তাঁরা পরিচিত।
তার এসব অপকর্মের সংবাদ পত্রিকায় ছাপালে তিনি সাংবাদিকের নামে ফেসবুকে অপপ্রচার চালাতে থাকেন। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা হয়। এরপর রাব্বিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাব্বির নামে মাদক, নারী নির্যাতন এবং চাঁদাবাজিসহ জেলার বিভিন্ন থানায় সাতটি মামলা রয়েছে।
রাব্বি নিজেকে পুলিশের সোর্স দাবি করেন এবং এ কথাও বলেন যে, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে তাঁর ভাল সম্পর্ক আছে। তার এসব কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে ১০-১২ জন সাঙ্গপাঙ্গ। তাঁর বিরুদ্ধে কোন পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত কিংবা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ নিলে তিনি সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন।
এ বিষয়ে বাঘা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, রাব্বি হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাঁকে জেলহাজতেও পাঠানো হয়েছে। এছাড়া তাঁর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন জব্দ রয়েছে থানায়। সেই মোবাইলে তার প্রতারণার বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আগামীনিউজ/নাহিদ