ঢাকা : বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়া চক্রের মূল হোতাসহ আন্তঃজেলা প্রতারকচক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পিবিআই, যশোর জেলা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- প্রতারকচক্রের মূল হোতা মো. সাদমান আকিব হৃদয় (২০), মো. সোহেল (২০), মো. অপু মোল্লা (১৯) ও মো. মনিরুল ইসলাম (২৬)। এদের মধ্যে মো. সাদমান প্রতারকচক্রের মূল হোতা।
পিবিআই এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা জানান, ২১ মার্চ দিবাগত রাতে পিবিআই, যশোর জেলা পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের হেফাজত হতে উক্ত প্রতারণামূলক কর্মকান্ডে ব্যবহৃত ১২ (বার) টি মোবাইল ফোন, বিভিন্ন অপারেটরের ২১(একুশ)টি সিম, টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বরের রেজিষ্টার, টাকা উত্তোলনের রেজিষ্টার এবং নগদ ২,৫০০/- টাকা উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরো জানান, জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত এবং বিভিন্ন টেলিভিশন মাধ্যমে প্রচারিত বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার বেশ কয়েকটি খবর প্রাপ্তির পর পিবিআই যশোর জেলা প্রতারণার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত করার চেষ্টা শুরু করে। এ লক্ষ্যে প্রতারিত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের খুজেঁ বের করে তাদের নিকট হতে প্রতারণার কৌশল এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। অতঃপর পিবিআই যশোর জেলার চৌকস দল বিগত ০১(এক) মাস যাবত বিভিন্ন প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহ ও তা বিশ্লেষন পূর্বক ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িতদের সনাক্ত এবং গ্রেফতার করে।
প্রতারক চক্রের কর্মকান্ড পরিচালনা সম্পর্কে রীমা সুলতানা জানান, তারা ০৩টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজ করে। প্রথমে গ্রুপটি মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন বিকাশের দোকান হতে তাদের হাতে থাকা মোবাইল দিয়ে কৌশলে দোকানের বিকাশের রেজিষ্টারের পাতার ছবি তুলে নেয়, যেখানে টাকা প্রেরক ও প্রাপকের মোবাইল নম্বরসহ প্রেরিত টাকার অঙ্ক উল্লেখ করে। তারপর ছবিগুলো দ্বিতীয়ধাপের প্রতারক গ্রুপের কাছে পাঠায়। ২য় গ্রুপটি ডিজিটাল কৌশলে বাস্তব প্রতারণায় দক্ষ। এরা বিকাশের মূল কার্যালয়ের অপারেটর/কর্মকর্তা সেজে বিকাশের মাধ্যমে প্রেরিত অর্থের প্রাপক/গ্রাহককে ফোন করে। ফোনে তারা গ্রাহককে জানান, টেকনিক্যাল কারণে বিকাশের মাধ্যমে গৃহীত টাকা ক্যাশ আউট (Cash Out) হবে না। অভ্যন্তরীণ কোড ভুল রয়েছে। যা ঠিক করে তারপর ক্যাশ আউট করতে হবে। এজন্য গ্রাহকের পিন কোড ও ভ্যারিফিকেশন কোড পাঠাতে বলে। গ্রাহক সরল বিশ্বাসে অথবা অনন্যোপায় হয়ে প্রতারক চক্রের চাহিদামত তথ্য সরবরাহ করে। প্রতারকচক্র বিকাশ অ্যাপের ভিতরে ঢুকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত তাদের নির্ধারিত বিকাশ নম্বরে টাকা পাঠিয়ে দেয়। সর্বশেষ তৃতীয় ধাপের প্রতারক গ্রুপ বিকাশ এজেন্ট এর নিকট হতে উক্ত টাকা উত্তোলন করে।
উল্লেখ্য, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিকাশ এজেন্টগণ কখনো বুঝে কখনো না বুঝে প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করেন। প্রতারণার কাজে জড়িতদের মধ্যে অধিকাংশই মাগুরা, নড়াইল, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, রাজশাহী ও যশোর জেলার অধিবাসী বলে তিনি জানান।উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে যশোর কোতয়ালী মডেল থানায় মামলা হয়েছে।
আগামীনিউজ/সুমন/মিজান