রাজবাড়ীঃ রাজবাড়ীর পাংশায় জোনাব দধি ভান্ডার সহ বেশ কয়েকটি মিষ্টি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি। মিষ্টির দোকানে নেই কোনো মূল্যতালিকা, তার ওপর প্রতিকেজি মিষ্টির খালি প্যাকেটের ওজন ২০৫ গ্রাম। একে তো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, অন্যদিকে ওজনে প্রতারণা শিকার হয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা।
পাংশা পৌর শহরের উপজেলা সড়কের মাহামুদ প্লাজা সামনে জোনাব দধি ভান্ডারে গেলে দেখা যায় সেখানে বিভিন্ন প্রকারের মিষ্টি সহ সিঙ্গারাও বিক্রি করা হচ্ছে।এত মিষ্টির কারখানা দেখতে চাইলে দোকানের কর্মচারী অল্পবয়সী(আনুমানিক ১০বছর) এক ছেলে নিয়ে যায় পেছনের মাংস বাজেরের ভেতর। এর সাথে মিষ্টির কারখানা। আশেপাশে পশুর বজ্র সহ নানা আবর্জনার গন্ধ যুক্ত স্থানে কারখানা হওয়ায় মাছির উপদ্রব তুলনামূলক বেশি লক্ষ্য করা যায়।অপরিস্কার ও স্যাঁতসেতে দুর্গন্ধময় স্থানে থরে থরে সাজানো রয়েছে ঈদ উপলক্ষে প্রস্তুত মিষ্টি।
এমন অবস্থা পাংশা পৌর শহরের বেশ কিছু মিষ্টির দোকানের।সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মিষ্টির দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় অতিরিক্ত দামে মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মিষ্টির প্যাকেট ওপরের কভার হালকা থাকলেও নিচের দিক ভারী। একেকটি প্যাকেটের ওজন ১৩৫-২০৫ গ্রাম। ক্রেতারা মিষ্টি ক্রয় করতে গেলে প্যাকেটসহ মিষ্টি ওজন করা হয়। এতে ক্রেতারা ১ কেজি মিষ্টি কিনলেও প্রকৃতপক্ষে পান ৭৫০-৮৫০ গ্রাম। কেউ নিজের দোকানের নামে আবার কেউ বাজার থেকে প্যাকেট স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে বিক্রি করা হচ্ছে মিষ্টির দামে। ডিজিটাল পাল্লায় ওজনের সঙ্গে কৌশলে মিষ্টির প্যাকেটেরও ওজন দেওয়া হয়। এতে প্রতিকেজি ১৪০-২১০ গ্রাম মিষ্টি কম দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি মিষ্টির দোকানে ওজনে প্রকাশ্যে চলছে কারচুপি। মিষ্টি তৈরির কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, অবস্থা আরও খারাপ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে দই, মিষ্টি। এর আশপাশে দুর্গন্ধে কোনোভাবেই থাকা যাচ্ছে না। মিষ্টির দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করলেও তাদের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ক্রেতা জানান,মিষ্টি কোথায় কিভাবে তৈরি হয় সেটা তো দেখা হয় না তবে ডেকোরেশন করা চকচকে দোকান থেকে মিষ্টি ক্রয় করি।তবে এসব দোকানে মূল্য তালিকা না থাকায় দোকানের মালিকরা ইচ্ছামতো মিষ্টির দাম আদায় করছেন। মিষ্টি ওজনের সময় প্যাকেটসহ পরিমাপ করছেন। আবার দইয়ের ক্ষেত্রে পাতিলের ওজনসহ বেশি দামে দই বিক্রি করছেন। আমরা দোকানদারদের কিছু বললে দোকানি বলে বেশি দামে নিলে নেন না নিলে না নেন। এটি দেখার যেন কেউ নেই। আমরা অনেকেই বেকায়দায় পড়ে বেশি মূল্য দিয়ে মিষ্টি কিনছি।
জোনাব দুটি ভন্ডদের মালিক বাচ্ছু মন্ডল দোকানে না থাকায় তার ছেলে সজিব মন্ডল (এস এস সি পরিক্ষা দিয়েছে) বলেন, আমার আব্বা এখন দোকানে নাই। আমাদের শেয়ারের ব্যবসা। আমার মিষ্টি বিক্রি করি আর দই আর একজন বিক্রি করে।আমি কিছু বলতে পারবো না।আব্বা আসলে কথা বইলেন।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, ভোক্তা অধিকারের মাধ্যমে নিয়মিত মিষ্টির দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে।জনস্বার্থে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মিঠুন গোস্বামী/এমআইসি