টাঙ্গাইলঃ কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণগঞ্জগামী একটি চলন্ত বাসে সকল যাত্রীর কাছ থেকে সর্বস্ব লুট ও গণধর্ষণের ঘটনায় আরো দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হলো।
গ্রেফতারকৃত দুইজন হলো- গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মোঃ আউয়াল (৩০) এবং কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারী উপজেলার ধনারচর পশ্চিম পাড়া গ্রামের নুরনবী (২৭)।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে গাজিপুরের সোহাগপল্লী ও কালিয়াকৈরের সুত্রাপুুর টান এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার হয়। এরপর দুপুর ১২টায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার। এর আগে বৃহস্পতিবার ভোরে শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে রাজা মিয়া নামের একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি নুরনবীর কাছ থেকে ডাকাতির সময় লুট করা একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এছাড়াও লুট করা মালামাল উদ্ধারের জন্য অভিযান চলছে। গ্রেফতারকৃত রাজা মিয়ার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে আউয়ালকে গ্রেফতার করা হয় এবং আওয়ালের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় নুরনবীকে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
এদিকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ সাদিকুর রহমান জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শরীরে বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। গণধর্ষণের শিকার হয়েছে কিনা তা সোয়াপ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে ৫ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে ৩ জন যাত্রী উঠেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও ৪ জন যাত্রী বাসে উঠে। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছু দূর যাওয়ার পর আরও ৩ জন যাত্রীবেশে বাসে উঠে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীরা ঘুমানোর এক পর্যায়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকা পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা হঠাৎ করে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে পুরোবাসের নিয়ন্ত্রণ নেন।
টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকায় থেকে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাত দলের সদস্যরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে আসে। এরই মধ্যে ডাকাত দলের সদস্যরা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করেন। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
এ ব্যাপারে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে। কুষ্টিয়ার হেকমত নামের বাসের যাত্রী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
শফিকুজ্জামান খান মোস্তফা/এমএম