নড়াইলঃ দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় নড়াইলের কালিয়া উপজেলার ১নংবাবরা হাচলা-৪নং মাউলি ইউনিয়নের বাড়ই-মহাজন ভায়া চান্দেরচর সড়কটি বেহাল দশা হয়ে পড়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। গত ৬ মাসে এ সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে ১জন নিহতসহ আহত হয়েছেন প্রায় অর্ধশত।
সরেজমিন দেখা গেছে, বাবরা হাচলা ইউনিয়নের বাড়ইপাড়া বাস স্টান্ড বাজার আর এইচ ডি সড়ক থেকে মহাজন বাজার পর্যন্ত চলাচলের প্রায় অনুপযোগী। দুই পাশ ভেঙে সড়কটি সরু হয়ে গেছে। পিচ ও আস্তর উঠে তৈরি হয়েছে অসংখ্য গর্ত। বৃষ্টি নামলেই সড়কটি হয়ে ওঠে আরো ভয়ংকর। চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়ে সড়কটি।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, বাড়ইপাড়া-মহাজন সড়কের দৈর্ঘ্য সাড়ে ১৪ কিলোমিটার ও ১০ ফুট প্রস্থ। সড়কটি ২০০৮ সালের পর থেকে আর সংস্কার হয়নি। ফলে সড়কে খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি নির্মাণের ফলে উপজেলার বাবরা হাচলা, মাউলি, নোয়াগ্রাম, চাচুড়ী, পার্শ্ববর্তী লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া, লোহাগাড়া সদর, ইউনিয়নসহ আশপাশের অন্তত ৫২টি গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক মানুষের জীবনযাত্রায় নানা পরিবর্তন হলেও তা এখন স্থবির।
স্থানীয়রা জানান, সড়কটির দুই পাশ ভেঙে গেছে। কোনো কোনো স্থানে ১০ ফুট প্রস্থ‘র মাঝে মাত্র চার-পাঁচ ফুট। এতে বিপরীতমুখী দুটি ইজিবাইক অতিক্রম করতে পারে না। যানবাহন পাশের খাদে পড়ে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
সড়কটি সংস্কার করা না হলে প্রায় লক্ষাধিক মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে দাবি স্থানীয়দের।
ইজিবাইক চালক কামরুল মোল্লা বলেন, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে গাড়ি চালানো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। গাড়ির যন্ত্রাংশ প্রায়ই নষ্ট হয়।
এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারি বেসরকারি এনজিও প্রতিষ্ঠান ব্র্যাকের এক কর্মী জানান, আমি ডিউটির জন্য এ রাস্তা দিয়ে লোহাগড়ায় যেতাম। কিন্তু রাস্তার অবস্থা খারাপ হওয়ার কারণে কালিয়া হয়ে বড়দিয়া মহাজন' খেয়া ঘাট পার হয়ে আমার লোহাগড়া যাওয়া লাগে।
এতে সময় এর পাশাপাশি আমার অর্থের অপচয় হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা নারায়ণ দাস ও মোতালেব হোসেন বলেন, সারা দেশের রাস্তাঘাটের উন্নতি হলেও আমাদের এলাকায় কোনো উন্নতির ছোঁয়া লাগেনি। এ সড়কটির বেহাল অবস্থার কারণে আমাদের চলাফেরা করতে অনেক সমস্যা হয়।
১নং বাবরা হাচলা ইউপি চেয়ারম্যান পিকুল হোসেন জানান, সড়কটিতে যাতায়াত একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গর্ভবতী মহিলা ও অসুস্থ রোগীদের জন্য যাতায়াতে খুবই সমস্যা হয়। ছোট-বড় গর্ত থাকায় প্রায়ই দুর্ঘটনা লেগে থাকে। সড়কটি সংস্কার করার জন্য এমপি মহোদয় ও এলজিইডি ইঞ্জিনিয়ার মহোদয়ের সাথে কথা বলেছি। খুব তাড়াতাড়ি রাস্তার কাজ শুরু হবে বলে তারা জানিয়েছে।
বিষয়ে ৪নং মাউলি ইউপি চেয়ারম্যান রোজি হক জানান, আমি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রাস্তার বেহাল নিরসনে নড়াইলের ১ আসনের সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি সাথে আলোচনা করে সড়কটি সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি।
কালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) প্রণব কান্তি বল জানান, সড়কটির অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা সড়কটি ১০ফুট থেকে ১৮ফুটে সংস্কার করার জন্য সকল কাগজপত্র এলজিডি হেড অফিসে পাঠিয়েছি। আশাকরি পাঁচ থেকে ছয় মাসের মধ্যে রাস্তার টেন্ডার হয়ে কাজ শুরু হবে।
মোঃ বাবর আলী/এমবুইউ