নীলফামারীঃ জেলার সৈয়দপুরে প্রদর্শিত ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটকে ইতিহাস বিকৃত করার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সৈয়দপুরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সৈয়দপুর উপজেলা কমান্ড ও শহিদ সন্তানরা এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করেন।
প্রেসক্লাব চত্বরে দুপুরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য বলেন শহিদ সন্তান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মহসিনুল হক মহসিন, পৌর আ’লীগের সভাপতি ও শহিদ পরিবারের সদস্য রফিকুল ইসলাম বাবু, বীর মুক্তিযোদ্ধা মির্জা সালাহউদ্দিন বেগ, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইউনুস আলী, শহিদ সন্তান মোহাইমেনিুল হক, নাট্য ব্যক্তিত্ব স.ম. সাঈদ রেজা, আ’লীগ নেতা সরকার মো. কবির উদ্দিন ইউনুস। এদিন এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সংহতি জানান মৎস্যজীবী লীগ সৈয়দপুর পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফুল হাসান মামুন তালুকদার, তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।
কর্মসূচিতে আক্ষেপ করে শহিদ সন্তান সাংবাদিক নিজু কুমার আগরওয়ালা বলেন আমার বাবা শহরের বিশিষ্টজন শহিদ রামেশ্বর লাল আগরওয়ালাকে গোলাহাট বধ্যভূমিতে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। অথচ প্রদর্শিত ওই নাটকে আমার বাবার কথা বাদ দেয়া হযেছে। এমনকি যারা মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন তাদেরকেও বাদ দেয়া হয়েছে। সরাসরি কিলিং মিশনের সঙ্গে জড়িত কুখ্যাত রাজাকার নঈম গুন্ডার নাম নাটকে আসেনি।
বক্তারা তাদের বক্তব্যে বলেন, সৈয়দপুরের বধ্যভূমিতে ১৯৭১ সালের ১৩ জুন একসঙ্গে কমপক্ষে ৪৪৮ জন সংখ্যালঘুকে হত্যা করা হয়। তাদেরকে ভারতে পাঠানোর নামে ট্রেনে করে সৈয়দপুর রেল স্টেশনের অদূরে নিয়ে গিয়ে গোলাহাট নামক স্থানে নির্মমভাবে করা হয় খুন। আর এই খুনের ঘটনা ও বাঙ্গালী হত্যাযজ্ঞের নেতা নঈম খান ওরফে নঈম গুন্ডাকে নাটকের চরিত্র থেকে পুরোপুরি আড়াল করা হয়েছে। ইতিহাস বিকৃতির শিকার হয়েছেন ডা. ইয়াকুব আলী, ডা. বদিউজ্জামানসহ অনেক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির তত্ত্বাবধানে গত ১৯ ডিসেম্বর ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটকটি প্রদর্শিত হয়। রাতে গোলাহাট বধ্যভূমিতে অনুষ্ঠিত ‘বধ্যভূমির শহর’ নাটকটি সৈয়দপুরের মুক্তিযুদ্ধে প্রেক্ষাপট নিয়ে রচিত হয়। এ নাটকটিক রচনা করেছেন দেবাশীষ বিশ্বাস।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা নাটকের স্ক্রিপ্ট নতুন করে লেখার আহ্বান জানান। প্রকৃত সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার দাবি জানিয়ে বলা হয়, নতুন প্রজন্ম যদি প্রকৃত ইতিহাস না জানে তাহলে মুক্তিযুদ্ধের শহিদের রক্ত বৃথা হয়ে যাবে। তারা দাবি জানিয়ে আরো বলেন নাটকে প্রকৃত ইতিহাস তুলে ফের তা প্রদর্শন করা হোক। আর এটি করা না হলে আরো বড় আন্দোলন করা হবে। অচল করে দেয়া হবে উত্তর জনপদ। একই সঙ্গে ইতিহাস বিকৃতকারী কুশীলবদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানানো হয়।
আগামীনিউজ/নাসির