আদালতের নির্দেশে কবর থেকে ময়না তদন্তের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রয়াত শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আহম্মেদ সাদাতের উপস্থিতিতে কুমারখালীর বাশগ্রাম কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করে খুলনার খানজাহান আলী থানা পুলিশ।
ড. সেলিমের মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য মঙ্গলবার বিকালে কবর থেকে তার মরদেহ তোলার কথা ছিল। সেজন্য কুষ্টিয়ার বাঁশগ্রামে কবরস্থানে যান পুলিশসহ স্বাস্থ্য বিভাগের প্রতিনিধিরা। সব প্রস্তুতি নেওয়ার পরও সূর্যাস্তের কারণে ম্যাজিস্ট্রেটসহ মরদেহ উত্তোলনকারী দল না যাওয়ায় গতকাল তার লাশ তোলা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, গত ৩০ নভেম্বর দুপুরে কুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক সেলিম হোসেনের মৃত্যু হয়। ১ ডিসেম্বর ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর বাঁশগ্রামে নিজ নিজ এলাকায় দাফন করা হয়।
তার মৃত্যু নিয়ে পরে নানা প্রশ্ন ওঠে। কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্র জানায়, কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজান তার মনোনীত ছাত্রকে সম্প্রতি লালন শাহ হলের ডাইনিং ম্যানেজার নিযুক্ত করার জন্য হলের প্রভোস্ট ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। গত ৩০ নভেম্বর সেজান ৪০-৪২ জন নেতাকর্মীকে নিয়ে আবারও ড. সেলিমকে চাপ প্রয়োগ এবং তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এই চাপ সহ্য করতে না পেরে বাসায় গিয়ে হার্ট অ্যাটাকে ড. সেলিমের মৃত্যু হয় বলে তার পরিবারের অভিযোগ।
পরিবারের অভিযোগের পর ড. সেলিমের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ৩ ডিসেম্বর সিন্ডিকেট সভায় ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কমিটিকে যে সময় দেওয়া হয় সেই সময় আরও ১০ দিন বাড়িয়ে নেন কমিটি।
তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. মহিউদ্দিন আহমাদ জানান, সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটের একাডেমিক কার্যক্রম ও হলগুলো ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ১৩ ডিসেম্বরের মধ্যে তারা তদন্ত সম্পন্ন করতে পারেননি। সে কারণে তারা সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন ক্যাম্পাস বন্ধ রাখার সুপারিশ করেন। এর প্রেক্ষিতে গত ১২ ডিসেম্বর রাতে সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাস ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তারাও তদন্তের জন্য আরও ১০ দিন সময় পেয়েছেন। তবে ২৩ ডিসেম্বরের আগেই তারা তদন্ত সম্পন্ন করার চেষ্টা করছেন।
আগামীনিউজ/নাসির