
গাজীপুর: শ্রীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এমসি বাজার এলাকায় স্পীড ব্রেকার ও ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় স্কুল-কলেজ, প্রাথমিকবিদ্যালয় ও ৬টি কিন্ডারগার্টেন সহ প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হচ্ছে রাস্তা। এ কারণে বিগত কয়েক বছরে শিক্ষার্থীদেরকে বিভিন্ন ধরণের দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়েছে।
এলাকার সচেতন মহল ও স্কুল কর্তৃপক্ষ, শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে স্কুলের সামনের সড়কে স্পীড ব্রেকার ও ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন গাজীপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাওনা চৌরাস্তা থেকে জৈনা বাজার পর্যন্ত মহাসড়কের ৬ কিলোমিটার রাস্তার পাশে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার একটি শিল্প সমৃদ্ধ, জনবহুল গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। এখানে বিভিন্ন কল কারখানায় চাকরির সুবাদে দেশের প্রায় সব জেলার লোকজন বসবাস করেন। অতি দ্রুত জনবসতি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাহিদার সাথে প্রয়োজন মেটাতে বাজার, মসজিদ, মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্টেন, প্রাইমারি স্কুল, হাইস্কুল,কলেজসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রতিদিন প্রায় ছয় থেকে আট হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী অভাবনীয় জীবন ঝুঁকি নিয়ে এ রাস্তা পারাপর হয়। শুধু তাই নয় নানা বহু ব্যবসায়ীক, সাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে। বাজারসহ এসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট লোকজন মিলে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ মহাসড়ক পারাপার হচ্ছে।
তাছাড়া মাওনা ওভার ব্রিজের ক্রসিং এমসি বাজারের উত্তরে হওয়ায় দ্রুতগামী যানবাহনগুলির গতি নিয়ন্ত্রণে নারাখার কারণে প্রায়সময়ই এমসি বাজারে দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।
এছাড়া বাজারের পশ্চিমে হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে পি ই সি, জে এস সি ও এস এস সি পাবলিক পরীক্ষা কেন্দ্র থাকায় পরীক্ষার সময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, পরীক্ষার্থী,শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বহুলোকের রাস্তা পারাপারে মারাত্মক অসুবিধা এবং ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হয়। এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র শ্রীপুর- ২ হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবার ১০টি স্কুলের ১৮শত ৭৫ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে।
তাছাড়া এ স্কুলে অধ্যয়নরত মোট শিক্ষার সংখ্যা ২ হাজার ২শ ৫০ জন। পাশ্ববর্তী মাওনা ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১২ শ শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। এমতাবস্থায় এমসি বাজারে একটি ফুটওভার ব্রিজ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে অতিব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সুবিবেচনা করে এমসি বাজারে একটি ফুটওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান। ঢাকা -ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসি বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে প্রায় একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অসংখ্য কিন্ডারগার্টেন রয়েছে।
এ মহাসড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করে। দুরপাল্লা এবং আভ্যন্তরীণ যানবাহনগুলো দ্রুত গতিতে চলাচল করে। ফলে প্রতিনিয়ত রাস্তায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
এ ব্যাপারে হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম বলেন, আমরা অনেক ভয় নিয়ে রাস্তা পার হই। আর রাস্তায় সারাক্ষণই দ্রুত গতিতে যানবাহন চলাচল করে। এখানে গতিরোধক ব্যবস্থা থাকলে আমরা সহজে রাস্তা পার হতে পারতাম।
ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক কামরুল ইসলাম ও এরশাদুল আলম বলেন, স্কুলের পূর্ব পাশে বড় রাস্তা। তাদের সন্তানদেরকে রাস্তা পার হয়ে স্কুলে যেতে হয়। তাই অভিভাবকদের শঙ্কার মধ্যে থাকতে হয় সবসময়।
হাজী ছোট কলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হান্নান সজল জানান, তার বিদ্যালয় এ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। ফলে সড়কের পূর্ব এলাকার শিক্ষার্থীরা এ সড়ক পার হয়ে তার স্কুলে আসতে চায় না। তাছাড়া বিদ্যালয়ের সামনে স্পীডব্রেকার না থাকায় ওই এলাকায় অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইতোমধ্যে তার এক শিক্ষার্থী বাসচাপায় ও সিএনজি ধাক্কায় আহত হয়েছেন । অপর এক শিক্ষার্থী ইজিবাইকের ধাক্কায় পা হারিয়েছে।
তাই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে অতিব জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি সুবিবেচনা করে এমসি বাজারে একটি ফুটওভার ব্রিজের ব্যবস্থা করতে কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
আগামীনিউজ/ হাসান