বগুড়াঃ জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় বুধবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরের দিকে বেড়ুঞ্জ দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি পদে লোক নিয়াগ কে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এঘটনায় ওই নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে জানা গেছে, উপজেলার বেড়ুঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি, আয়া ও ঝাড়ুদার পদে নিয়োগের জন্য বুধবার (১৭) সকাল ১০ টায় সময় নির্ধারণ করে প্রবেশপত্র ইস্যূ করা হয় আবেদনকারীদের নিকট।
বুধবার নির্ধারিত সময়ে নিয়োগ পরীক্ষার্থীরা উপস্থিত হলেও দুপুর ১২ টার দিকে পরীক্ষা গ্রহনের প্রস্তুতি শুরু করে কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষার প্রস্তুতি গ্রহণের সাথে সাথেই উত্তেজিত হয়ে ওঠে প্রতিপক্ষ একটি গ্রুপ। তারা অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ করা হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে নিয়োগ পরীক্ষা বন্ধের দাবিতে অপর পক্ষের উপর হামলার চেষ্টা করে। আইন শৃংখলা বিঘ্নের আশংকায় সেখানে দ্রুত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নেয়।
পরে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরহাদ আলী খোকন, প্রধান শিক্ষক মাহমুদুল রশিদ নিয়োগ বোর্ড নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়। সে মোতাবেক সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক স্বাক্ষরিত পত্রে তিনটি পদের নিয়াগ পরীক্ষা অনিবার্য কারণ বশত: স্থগিত ঘোষণা করে নোটিশ প্রদান করেন। সেই সাথে পরবর্তীতে উক্ত পরীক্ষার তারিখ জানানো হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়।
এদিকে পরীক্ষা স্থগিত হওয়ার পরে দ্বিতীয় দফায় বেড়ুঞ্জ মন্ডলপাড়ায় দু’পক্ষর মধ্য আবারও সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের শাহীন আলম (৩০), তছলিম উদ্দীন (৩৭), ইমরান (২২), ইসরাফিল (২৩), সোহাগ (২৫), আসাদুজ্জামান (২৬), পিয়াস (২৭), সুজন (২৪), আলামিন (১৭), সেকেন্দার আলী (৪৮), বেদনা বিবি (৪৫), জনি (৩০), আলাউদ্দীন (২৮), কামরুল ইসলাম (৫৫) ও জাকারিয়া (১৮) সহ ১৫ জন আহত হয়।
আহতরা দুপচাঁচিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সে জরুরী বিভাগে চিকিৎসা গ্রহণ করেন।গুরুতর আহতদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
উল্লখ্য, উপজলার বেড়ুঞ্জ দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের তিনটি পদে নিয়াগের জন্য লাখ লাখ টাকা বাণিজ্যের অভিযোগ এনে বেড়ুঞ্জ গ্রামের আনায়ার হোসনের ছেলে অফিস সহায়ক পদে নিয়োগপ্রার্থী সামছুদ্দিন মন্ডল, আয়া পদে নিয়োগপ্রার্থী মামুনুর রশিদর স্ত্রী বিলকিস বেগম সোমবার (১৫ নভেম্বর) বগুড়া জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিতভাবে অভিযোগ করেন।
অভিযাগে উল্লেখ করা হয়, নিয়াগ পরীক্ষার পূর্বে বিদ্যালয়র ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ফরহাদ আলী খোকন প্রধান শিক্ষকের সাথে যোগসাজশ করে অফিস সহায়ক পদে সোহাগ হোসনের নিকট থেকে ১৩ লাখ টাকা, আয়া পদে তাপসী রানীর নিকট থেকে ১০ লাখ টাকা এবং ঝাড়ুদার পদে মেহেদী হাসান রাজুর কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা গ্রহণ করেন। নিয়োগ পরীক্ষার পূর্বেই ম্যানজিং কমিটির সভাপতি অনিয়ম, নিয়োগ বাণিজ্য ও দুর্নীতি করে তিন জন প্রার্থীর কাছ থেকে ৩৩ লাখ টাকা চাকুরি প্রদানের জন্য হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযাগে উল্লেখ করেন। ওই অভিযোগ পত্রে বিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি তদন্ত করে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধে প্রয়াজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানান তারা।
আগামীনিউজ/শরিফ