নারায়নগঞ্জঃ ২৯ সেপ্টেম্বর বুধবার ইউনিয়রন পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সম্ভবনা রয়েছে। আর এ লক্ষ্যে রূপগঞ্জের ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বার প্রার্থীরা দোয়া , আর্শীবাদ নেয়া, আস্তাবাজনদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়, ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় সহ মনোনয়নের জন্য দৌড় ঝাপ শুরু করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা সরব প্ররাচনার মাঠে থাকলেও বিএনপি প্রার্থীরা একেবারেই নীরব।
মনোনয়ন প্রত্যাশি আওয়ামী প্রার্থীরা দোয়া চেয়ে ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার ব্যান ফেস্টুন করছেন। কেউ কেউ আবার দলীয় মনোনয়ন না পেলেও সতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করবেন বলেও জানিয়েছেন। অন্যদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপি’র চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশি এক নেতা বলেন, আমরা কেন্দ্রের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছি। কেন্দ্র থেকে নির্দেশ দিলেই মাঠে নেমে পড়ব।
আরেকজন বিএনপি’র চেয়ারম্যান মনোনয়ন প্রত্যাশি জানান, আমরা কিছু কাজ এগিয়ে রেখেছি। তফসিল ঘোষনা হোক। কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলেই পুরোদমে মাঠে নেমে কাজ শুরু করে দেব। তিনি আরো বলেন, অবাধ সুষ্ট নির্বাচন হলে, জনগন ভোট দিতে পারলে আমাদের জয় সুনিশ্চিত।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীকের সমর্থনের অপেক্ষায় রয়েছে রূপগঞ্জের আওয়ামী চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। ইতোমধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের কর্মী সমর্থক নিয়ে মন্ত্রীর বাসায় এসে দেখা করছেন। মন্ত্রীর কাছ থেকে দোয়া নিচ্ছেন।
আগামী ডিসেম্বর মাসের মধ্যে রূপগঞ্জ উপজেলার মোট ৫ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মধ্যে রয়েছে কায়েতপাড়া, গোলাকান্দাইল,ভুলতা,মুড়াপাড়া, ভোলাব। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যাপারে মন্ত্রী জানান, তৃণমূল আওয়ামী লীগ যাকে বেশি সমর্থন করবে সেই আমার সমর্থন পাবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেবেন সেই আমার প্রার্থী। দলের ত্যাগী এবং প্রকৃত নেতারা আওয়ামী লীগের টিকেট পাবে।
সুত্রের খবর কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম এবার নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তবে তার ছোট ভাই, নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের সদেস্য মিজানুর রহমান নির্বাচন করবেন। এ ইউনিয়নে কায়েতপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আলহাজ্ব জাহেদ আলী দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তার পাশে রয়েছে অধিকাংশ। কায়েতপাড়া ইউনিয়নে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি এ্যাড. গোলজার হোসেন বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশনা পেয়ে অবশ্যই নির্বাচন করব। আমি করোনা মহামারীসহ বিভিন্ন দুর্যোগে কায়েতপাড়াবাসীর পাশে ছিলাম, আশি এবং ভবিষ্যতেও থাকব, ইনশায়াল্লা।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ভুঁইয়া। তিনি গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সভাপতি । এবার গোলাকান্দাইলে নবীন – প্রবীনের মনোনয়ন লড়াই হবে। এখানে একাধিক তরুণ হেভিওয়েট মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। তারা হলেন রূপগঞ্জ উপজেলা যুবলীগ সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ সদস্য কামরুল হাসান তুহিন, রূপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক নাঈম ভুঁইয়া। কামরুল হাসান তুহিন আর বর্তমান চেয়ারম্যান মনজুর রহমান ভুইয়া একই গ্রামের লোক। তাদের বাড়ি হোড়গাঁওতে।
গত নির্বাচনে হোড়গাঁও থেকে বিএনপিও প্রার্থী দিয়েছিলো। এবার দেখার বিষয় কি হয়। নাঈম ভুঁইয়া সরাসরি মাঠে নেমে প্রচারণা করে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে কামরুল হাসান তুহিনের সমর্থকরা তার প্রচারণা চালাচ্ছে। তাকে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চায় তা প্রচার করছে।
ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক ভুঁইয়া। তার বিপক্ষে এবার মাঠে নেমেছেন তার ভাবি শামীমা সুলতানা ঝিঁনু। ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম হারুনুর রশিদ ভূঁইয়ার স্ত্রী শামীমা সুলতানা ঝিনু । তিনি বিভিন্ন ওয়ার্ডে উঠান বৈঠক করছেন।
মুড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ আলমাছ। জানা গেছে তিনি এবারও দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। তার সমর্থকরা মাঠে রয়েছে। করোনার মধ্যে তিনি মাঠে ছিলেন। বাড়ি বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিয়েছেন তিনি। সুত্রের খবর সরকারি মুড়াপাড়া কলেজের সাবেক ভিপি মনির হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল জব্বার (জব্বার মেম্বার), সাবেক চেয়ারম্যান বরকত হোসেন, রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ ভুঁইয়া মাছুম আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ।
ভোলাব ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন টিটু। তিনি বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান। গত নির্বাচন ভোলাবতে আওয়ামী লীগের চরম দ্বন্দ্ব ছিলো। এবার কি হয় সেটা এখন দেখার বিষয়। এবার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। তাদের মধ্যে রয়েছে ভোলাব ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন , সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব হাসান আশকারী, আওয়ামী লীগ নেতা এড. তায়েবুর রহমান। তারা তিনজন এবং তাদের সমর্থকরা মাঠে প্রচারণা চালাচ্ছে।