1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

সৈয়দপুরের পাঁচ ইউনিয়নে চলছে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা

জিকরুল হক, উত্তরাঞ্চল প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১, ০৪:২১ পিএম সৈয়দপুরের পাঁচ ইউনিয়নে চলছে আগাম নির্বাচনী প্রচারণা
ছবি: সংগৃহীত

নীলফামারীঃ জেলার সৈয়দপুর উপজেলার পাঁচ ইউনিয়নে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা জোরে শোরে চলছে। অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রার্থীতার ঘোষণা দিচ্ছেন। আসছে ডিসেম্বরে হতে পারে এসব ইউনিয়নে নির্বাচন।

ওইসব ইউনিয়ন সরেজমিন ঘুরে সম্ভাব্য প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে যে সব তথ্য মিলেছে তা পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নে আপাতত চারজনের নাম চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন শামসুল হক সরকার, প্রভাষক মেহেদী হাসান সুরোজ মন্ডল, ডা. মো. শাহজাদা সরকার ও মো. বাবুল হোসেন। কথা হয় শামসুল হক সরকারের সঙ্গে। তিনি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক নেতা। ধারণ করেন মুজিবীয় আদর্শ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আইকন। সমাজের সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের পূর্ণ নাগরিক সুযোগ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে তিনি ইউপি চেয়ারম্যান হতে চান। শামসুল হক সরকার আগামী নিউজকে বলেন, চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে তিনি মাদক, বাল্য বিয়ে, চুরি ও সন্ত্রাসমুক্ত করবেন। শিক্ষাব্রতী এই মানুষটি তার দাদার নামে খলিলুর রহমান কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন। এই সংগঠনের মাধ্যমে তিনি লক্ষণপুর বালাপাড়া দাখিল মাদ্রাসায় অধ্যায়নরত শিশু শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় উৎসাহ দেয়ার জন্য খাতা কলম দেন। বিদায়ী শিক্ষার্থীদের দেন উপহার। গরিব অসহায় ছাত্রছাত্রীদের পোশাকও দেন তিনি। ঝড়ে পড়া শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখো করতে সরবরাহ করেন টিফিন। আগামী দিনে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ প্রদানের কাজটি ক্রমান্বয়ে তিনি সারা উপজেলা জুড়েই করতে চান। ইতোমধ্যে শামসুল হক সরকার তার ইউনিয়নে মসজিদ, মন্দির, রাস্তা, কালভার্ট, ড্রেন নির্মাণ ও সংস্কারে সাধ্যমতো সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন সোনার বাংলা বাস্তবায়নের লক্ষে তার ইউনিয়নকে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত দেশের মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছেন। আর এটিই তার নির্বাচনী অঙ্গিকার। 

কথা হয় প্রভাষক মেহেদী হাসান সুরোজ মন্ডলের সঙ্গে। তিনি বাঙ্গালীপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার বাবা আব্দুস সামাদ মন্ডল প্রবীণ আ’লীগ নেতা। বর্তমানে তিনি জেলা আ’লীগের উপদেষ্টা হিসেবে আছেন। ছিলেন উপজেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি। দীর্ঘদিন ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাবার ব্যক্তি ইমেজ ও নিজের কর্মদক্ষতা কাজে লাগিয়ে তিনি একজন স্বচ্ছ জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হতে চান। ইতোমধ্যে তিনি ব্যক্তিগত অর্থে ইউনিয়নের দুটি রাস্তা সংস্কার করে দিয়েছেন। করোনাকালে থেকেছেন মানুষের পাশে। শীতার্ত মানুষের মাঝে দিয়েছেন শীতবস্ত্র। প্রার্থীতা নিশ্চিতের আশায় ইউনিয়নের পাড়ায় পাড়ায় করছেন উঠান বৈঠক। হতদরিদ্র মানুষদের জন্য ফ্রী চিকিৎসা ক্যাম্প করেছেন।

সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ডা. শাহজাদা সরকার ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে তার প্রার্থীতা ঘোষণা দিয়েছেন। বাবুল হোসেন বিএনপির নেতা। তিনি নিজ দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন। তবে ওই চার প্রার্থীর মধ্যে চায়ের টেবিল ও বিশিষ্টজনদের মাঝে আলোচনায় তুঙ্গে আছেন শামসুল হক সরকার। জনপ্রিয়তাতেও শীর্ষে তিনি। 

খাতামধুপুর ইউনিয়নে প্রার্থীর সংখ্যা মাত্র দুইজন। এর মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান জুয়েল চৌধুরী ও যুবলীগের ইউনিয়ন সভাপতি মাসুদ রানা পাইলট। বর্তমান চেয়ারম্যান আমজনতার প্রার্থী হিসেবে নিজের প্রার্থীতার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তিনি আগামী নিউজকে বলেন তার শাসনামলে ইউনিয়নকে চুরি ও মাদকমুক্ত করেছেন। গ্রামীণ রাস্তা শতকরা ৬০ ভাগ পাকা করেছেন। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা করেছেন নিশ্চিত। কোভিড মোকাবেলায় সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। কোভিডে মৃত্যু ব্যক্তিদের নিজে গোসল করিয়ে দাফনের ব্যবস্থা করেন। নরমাল ডেলিভারীর বিষয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের সহাতায় মানুষকে সচেতন করছেন। ছোটখাট ঘটনা নিজ ইউনিয়ন আদালতেই সমাধা করেন। ভূমিহীনদের বাসস্থান ও যুবসমাজকে বিপথ থেকে ফিরিয়ে আনতে খেলার সামগ্রী প্রদান অব্যাহত রেখেছেন। বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানে রেখেছেন স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত। প্রত্যেক মসজিদ, মাদ্রাসায় সোলারের মাধ্যমে আলোর ব্যবস্থা এবং ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় স্ট্রিটল্যাম্প ও ক্লিনিকে সোলার ল্যাম্প লাগিয়েছেন। এছাড়াও ইউনিয়নকে সবুজায়ন করতে ১৬ কিলোমিটার বনায়ন করেছেন। এদিকে মাসুদ রানা পাইলট নিজ অর্থ ব্যয়ে সাধারণের চলাচলের রাস্তা সংস্কার করে দিচ্ছেন। গরিব অসহায় মানুষদের পাশে থেকে আর্থিক সহায়তা সাধ্যমত করছেন। পাইলটের বাবা বীরমুক্তিযোদ্ধা মোখলেছুর রহমান দীর্ঘ ২৭ বছর ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বড় ভাই আজমল হোসেন ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান ও বর্তমানে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সে কারণে পাইলটও বাবা ও ভাইয়ের পদাঙ্ক অনুসরন করে প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়ে জনসংযোগ করছেন। 

কামারপুকুর ইউনিয়নে আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জনগনের মুখে আলোচনায় আছে বর্তমান চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমান, সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জিকো আহমেদ, সভাপতি আনোয়ার হোসেন সরকার। চেয়ারম্যান লোকমান বলেন, তার শাসন আমলে ইউনিয়নে মাদক ও চুরি ৯০ ভাগ বন্ধ করতে পেরেছেন। নির্মাণ করেছেন ব্রীজ। সিসিকরন করেছেন গ্রামীন রাস্তা। বয়স্ক ভাতা বাড়িয়েছেন। গ্রাম আদালতেই সমস্যা সমাধানে যথা সম্ভব ভূমিকা রাখছেন। সরকারি ত্রাণ বিতরণে বজায় রাখছেন স্বচ্ছতা। অবহেলিত জনগোষ্ঠির প্রতি বিশেষ নজর দেয়া হয়েছে। আশ্রায়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ভিটাহারা মানুষদের মাথা গোঁজার ঠাই করেছেন। হাতের নাগালে মানুষ যাতে নাগরিক সুবিধা পায় সেই লক্ষেই তিনি কাজ করে যাচ্ছেন। অপর দুই প্রার্থী জিকো আহমেদ ও আনোয়ার হোসেন সরকার তাদের প্রার্থীতা প্রচার করতে পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে জনসংযোগ করছে। 

উপজেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন বোতলাগাড়ী। এই ইউনিয়নে আগামী নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা দিয়ে মাঠ চষিয়ে বেড়াচ্ছেন ৩ জন। এরা হলেন ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ও সাবেক ছাত্রনেতা প্রভাষক আব্দুল হাফিজ হাপ্পু, আ’লীগের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান জুন ও যুবলীগ নেতা সাখাওয়াত হোসেন স্বপন প্রামানিক। হাপ্পু ও জুন গ্রামে গ্রামে ফুটবল খেলার প্রতিযোগিতা করে নিজেদের প্রার্থীতা আলোচনায় আনছেন। তবে স্বপন প্রামানিক প্রার্থীতা প্রচারে নিয়েছে গেরিলা পদ্ধতি। তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সব বয়সী নারী পুরুষদের কাছে দোয়া চাইছেন। অবশ্য এই তিন প্রার্থীর মধ্যে ঝানু রাজনীতিক প্রভাষক আব্দুল হাফিজ হাপ্পু। অপরদিকে স্বপন প্রামানিকের নানা মরহুম তাজির উদ্দিন সরকার ছিলেন বোতলাগাড়ী ইউপির জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ও তার মামা মরহুম ছাইদুর রহমান সরকার দীর্ঘদিন এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান হিসেবে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। প্রার্থী স্বপন প্রামানিক নানা-মামাকে পুঁজি করে নিজের তৈরী জনপ্রিয়তায় এগুতে চাইছেন। কাশিরাম ইউনিয়নে দুইজন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে এযাবত আলোচনায় আছেন তারা হলেন সাবেক চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন চৌধুরীর ছেলে জাকের পার্টির নেতা লাঞ্চু চৌধুরী ও সাবেক চেয়ারম্যান এনামুল হক চৌধুরীর ছেলে আ’লীগ পন্থি বুলবুল চৌধুরী। 

পাঁচ ইউনিয়নে উল্লেখিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা প্রতিদিন নিজ নিজ ইউনিয়নের পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে উঠান বৈঠক করছে। দোয়া চাইছে। অংশ নিচ্ছে সামাজিক সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner