1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

রাজারহাটে তীব্র নদী ভাঙ্গনে সহস্রাধিক পরিবার গৃহহারা

আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২১, ০৪:৪৮ পিএম রাজারহাটে তীব্র নদী ভাঙ্গনে সহস্রাধিক পরিবার গৃহহারা
ছবি: আগামী নিউজ

কুড়িগ্রামঃ তিস্তা নদী নিয়ে সরকারের মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের আগেই ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। এবারেও তীব্র নদী ভাঁঙ্গনে রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম,চরগতিয়াশাম ও বগুড়াপাড়া গ্রামে মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৫শতাধিক সহ দুই ইউনিয়নের ১০ গ্রামে এক মাসে সহস্রাধিক মানুষ গৃহহারা হয়েছেন । তবে হুমকী দেয়ার অভিযোগে নদী ভাঁঙ্গন প্রতিরোধে গতিয়াশাম এলাকায় কাজ করছেন না পাউবো কর্তৃপক্ষ। 

কুড়িগ্রাম পাউবো সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী ভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধ কল্পে সরকার একটি মেগা প্রকল্প গ্রহন করেছে। যা বাস্তবায়ন হলে ভাঁঙ্গন প্রতিরোধসহ নদী পাড়ের বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মানোন্নয়নে আমূল পরিবর্তন আসবে। তবে দীর্ঘদিনেও ওই প্রকল্পের কাজ শুরু না হওয়ায় প্রতিনিয়ত নদী ভাঁঙ্গনের শিকার হচ্ছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে নদী ভাঁঙ্গনের তীব্রতা বেড়েই চলছে। ইতোমধ্যে উপজেলার ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের খিতাবখাঁ,বুড়িরহাট,গতিয়াশাম,চরগতিয়াশাম,শরিষাবাড়ি বগুড়াপাড়া এবং বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি,কালির মেলা,চতুরা,গাবুর হেলান,রতি,তৈয়বখাঁ,চর বিদানন্দ সহ ১০টি গ্রামের বিভিন্ন স্থানে সহস্রাধিক মানুষ গৃহহারা হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহের ব্যবধানে গতিয়াশাম,চরগতিয়াশাম ও বগুড়াপাড়া গ্রামে নদী গর্ভে ৫শতাধিক মানুষের বসত ভিটা,স্থাপনা,দুই শতাধিক একর ফসলী জমি,আড়াই কিলোমিটার রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। অব্যাহত ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটছে নদী পাড়ের মানুষদের। 

এছাড়া তীব্র ভাঁঙ্গনের কারনে হুমকীর সম্মুখীন হয়ে পরেছে তৈয়বখাঁ বাজার,কালিরহাট বাজার,বুড়িরহাট বাজার,তৈয়বখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ২০টি প্রতিষ্ঠান,নানা স্থাপনা ও ফসলী জমি। দিনের পর দিন ভাঁঙ্গনে হারিয়ে যাচ্ছে দু’টি ইউনিয়নের মানচিত্র । এলাকাবাসীর জানান,জরুরী ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে যেকোন মহুর্তে নদী গর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে এসব প্রতিষ্ঠান। ভাঁঙ্গন আতঙ্কে অনেকে গ্রাম ছেড়েও চলে যাচ্ছেন অন্যত্র। এমতাবস্থায় তারা স্থায়ীভাবে ভাঁঙ্গন রোধে সরকারের মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবী জানান। 

এদিকে ভাঁঙ্গনের শিকার পরিবার গুলো খোলা আকাশের নীচে মানবেতর দিনাতিপাত করলেও এখন পর্যন্ত তারা সরকারি বা বেসরকারি কোন সাহায্য-সহযোগীতা পাননি বলে জানান। চরগতিয়াশাম বগুড়াপাড়া গ্রামে দেখা যায়,ওই গ্রামের মানিক মিয়া (৬৫) এর আধাঁপাকা বিল্ডিং বাড়িটি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এখন তারা নিজেরাই বাড়িটি ভেঁঙ্গে টিন,ইট,রড সহ অন্যান্য সামগ্রী সরিয়ে ফেলার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। এখনও বাড়িটির ভগ্নাংশ পরে রয়েছে। 

মানিক মিয়া বলেন,“ ২০/২৫দিনে পনের ষোল দোন মাটি (জমি) নদীতে বিলীন হয়েছে। ১৫/২০লাখ টাকা খরচে বাড়ি করছিলাম,তাও চলে গেল। আমাদের আর কোথাও যাওয়ার পথ নেই,এখন কি করবো আল্লাহ মালিক ছাড়া কেউ জানে না”।

উক্ত গ্রামের শাহিনা বেগম বলেন“তিস্তা নদী ভাংতে ভাংতে আমাদের ঘরের কাছে এসে গেছে,কখন যে ঘর ভেঁঙ্গে পড়ে এই আশংকায় আমরা ঘর ভেঁঙ্গে নিয়ে খোলা আকাশের নীচে আছি”। 

একই গ্রামের আব্দুল খালেক বলেন“এই বাড়ি গুলা সবই ভাঁঙ্গি যাচ্ছে,আর কয়েকটা দিন যাবত আমার সবাই গুলা সহযোগীতা করিয়া বাড়ি গুলা পার করিয়া দিতেছি”। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম জানান,ভাঁঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ১লক্ষ টাকা ও ১মেঃ টন চাউল বরাদ্দ পেয়েছি,তালিকা হচ্ছে,দু-একদিনের মধ্যে দেয়া হবে।

কুড়িগ্রাম পাউবোর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান বলেন,গতিয়াশাম,চরগতিয়াশাম গ্রামে গত জুলাই মাসে টানা ৫দিন ভাঁঙ্গন প্রতিরোধে কাজ করার পর ওই এলাকার লোকজন পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকদের বেঁধে মারধরের হুমকী দেয়ায় পরে আর কাজ করা হয়নি।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner