
সিরাজগঞ্জঃ জেলার তাড়াশে চাঞ্চল্যকর ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী মতিন হত্যার ৪ আসামী আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
রোববার (২৯ আগষ্ট) সকাল ১১টা দিকে বিষয়টি সংবাদ সম্মেলন করে নিশ্চিত করেছেন পিবিআই পুলিশ সুপার মো.রেজাউল করিম।
আটককৃতরা উপজেলার তালম গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩১), গুল্টা গ্রামের মৃত বাবুলাল তির্কীর ছেলে নিরঞ্জন তির্কী (৪৭), মৃত সুধীর এক্কার ছেলে লালন এক্কা (২৪) ও খোকা তপ্যর ছেলে রাজ কুমার তপ্য (৩১)।
চলতি বছরের (১৬ জুন) বুধবার সকালে গুল্টাবাজার দ্বিমূখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় ছেলেরা ক্রিকেট খেলার সময় বল খুঁজতে ঐ স্কুলের দক্ষিণ পশ্চিম পাশে টয়লেটের সামনে মৃত মতিনকে দেখেন পান।
বিষয় পরিবারকে জানালে তারা সনাক্ত করে পরে থানা পুলিশকে বিষয়টি জানালে তাড়াশ থানা পুলিশ সুরতহাল প্রস্তুত করে ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো।
উক্ত ঘটনায় মতিনের ভাই মোতালেব থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।
আটককৃতদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের বর্ননা করতে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার বলেন, নিহত মতিনের দোকানের পাশেই ইলেকট্রনিক্সের ব্যবসা করতেন আরিফুল ইসলাম। মতিনের ব্যবসার উন্নতি দেখে ঈর্ষাকাতর হয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করে আরিফ।
তিনি আরো জানান, তিন-চার মাস আগে স্থানীয় স্কুলমাঠে একটি ইসলামি জলসায় বক্তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করেও আরিফ ও মতিনের কথা কাটাকাটি হয়। এতে আরিফের টার্গেটে পরিণত হয় মতিন।
ঘটনার দিন ১৬জুন ২০২১ রাত ১টার দিকে মতিন দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাওয়ার সময় তার গতিরোধ করে নিরঞ্জন, নিরঞ্জনের স্ত্রী পদ্মা, নিরঞ্জনের ছেলে মিঠুন ও আরিফ। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে নিরঞ্জন ও আরিফের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় মতিনের। এসময় নিরঞ্জনের সহায়তায় মতিনের ঘাড় মটকে দেয় আরিফ। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যান মতিন।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রথমে মতিনের নিথর দেহ ১৫ মিনিটের মতো নিরঞ্জনের বাড়িতে রাখা হয়। তার মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে ২/৩ কিলোমিটার দূরে ডোবার মধ্যে রেখে আসা হয়। এরপর হাইস্কুল মাঠের পাশে টয়লেটের ছাদে উঠে মতিনের মরদেহ নিচে ফেলে দেওয়া হয়।
স্থানীয় মাঠে ছেলেরা ক্রিকেট খেলার একপর্যায়ে বল গিয়ে পড়ে টয়লেটের পাশে। সেখানেই তারা মতিনের মৃতদেহ দেখে। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ১৬ জুন তাড়াশ থানায় নিহতের ভাই মো. মোতালেব হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করে। নিহত আব্দুল মতিন (৩৮) তালম পদ্মপাড়া গ্রামের ফজলার রহমানের ছেলে।