পটুয়াখালীঃ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পযটন কেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। গত ১ এপ্রিলের পর থেকে সংক্রমণরোধে কুয়াকাটা সৈকতে পযটকদের নামতে দেয়া হয়নি। এরপর থেকে সৈকত ও বিনোদন কেন্দ্রে ভ্রমণ থেকে বিরত ছিলেন পযর্টকরা। ১৯ আগস্ট পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্র খুলে দেওয়ার আগেই সৈকতে ভিড় করেছেন হাজারো পযটক। আগত এ সকল পযর্টকদের শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে ট্যুরিষ্ট পুলিশ ও থানা পুলিশসহ মাঠে ভ্রাম্যমান আদালতের টিম কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া উপজেলা প্রশাসন। প্রকৃতির এক অপরূপ সৌন্দযের লীলাভূমি কুয়াকাটা। প্রকৃতিকে কাজে লাগিয়ে দেশী-বিদেশী উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট বড় পযটনস্পট।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঊর্ধ্বগামী পযটন শিল্পের বিকাশে থাবা বসিয়েছে মহামারী করোনা ভাইরাস। পযর্টনমুখী সংশ্লিষ্টদের জীবন জীবিকা পড়ে হুমকির মুখে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পযটন কেন্দ্র কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল রিসোর্টসহ সকল বিনোদন কেন্দ্র উন্মুক্ত করা হয়েছে, পযটন ব্যবসায়িদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চয় দেখা দিয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে গিয়ে দেখা যায়, গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সৈকতে নেমেছে পযর্টকরা। কেউ ঘোড়ায় চড়ে, কেউ সৈকতে সাগরের ঢেউয়ে সাথে গোসল করে উল্লাসে মেতেছেন। কেউ কেউ প্রিয়জনের হাত ধরে ঘুড়ে বেড়াচ্ছেন। কেউ আবার উপভোগ করছেন প্রাকৃতিক সৌন্দয। এমন দৃশ্য আবার তাদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোন দিয়ে সেলফি তুলে ধারন করেছে অনেকে। এর ফলে পযর্টকের এমন ভীড়ে পযটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ফিরে পেয়েছে প্রাণ-চাঞ্চল্য।
বেড়াতে আসা এক পর্যটক দম্পতি দিনা ও জামিল এ প্রতিনিধিকে বলেন, দীর্ঘদিন ঘরে বন্দী ছিলাম। সকালে কুয়াকাটায় এসে পৌছেছি। ফ্রেস হয়ে সৈকতে নেমেছি, কি মজা। আমরা তো স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সৈকতে বেড়াতে এসেছি। অপর এক পযটক রাতুল বলেন, কতদিন বাসায় বন্দি সময় কাটাবো ? আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কুয়াকাটা এসেছি।
হোটেল সমুদ্র বাড়ির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: জহিরুল ইসলাম মিরন এ প্রতিনিধিকে বলেন, গত পহেলা এপ্রিল থেকে কোভিট-১৯ দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পযটন কেন্দ্র কুয়াকাটায় পযর্টকদের ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। দীর্ঘ বন্ধ থাকার বৃহস্পতিবার থেকে হোটেল-মোটেল খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের হোটলে আগেভাগেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রেখেছি।
ওয়ার্ল্ড ফিস পটুয়াখালী জেলা সহকারী গবেষক সাগরীকা স্মৃতি এ প্রতিবেদককে বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে দীর্ঘ সময় মানুষের কেলাহল না থাকায় লাল কাকরাগুলো যেনো আপন মনে বেরুচ্ছে। এসব দৃশ্য আগত পযর্টকদের দৃষ্টি কাড়ে। আমরাও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছি।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশ-পরিদর্শক মো: বদরুল কবির গনমাধ্যমকে বলেন, বর্তমানে সৈকতে পযর্টকের সংখ্যা কম। যারা আসছে তাদেরকে সৈকতে সংঘবদ্ধভাবে না চলা ও বাধ্যতামূল মাস্ক ব্যবহারের জন্য বার বার মাইকিং করে বলা হচ্ছে। এছাড়া পযটন স্পটগুলেতে ট্যুরিস্ট পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহীদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার লক্ষে বুধবার পযর্টনমুখী ব্যবসায়িদের সাথে আলোচনা সভায় আবাসিক হোটেলগুলোকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পযর্টকদের রাখতে বলা হয়, মোটরসাইকেল চালক ও খাবার হোটেল গুলোকে ভাড়া ও খাবারের নির্ধারিত তালিকা প্রণয়ন, পযটক সেবা ও হয়রানি বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।