বরিশালঃ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে অক্সিজেনের অভাবে রানু বেগম (৫০) নামের এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারা যাওয়া রানু বেগম নগরীর ৬ নম্বর ওয়ার্ড পলাশপুর নতুন ব্রিজ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল জলিলের স্ত্রী ছিলেন।
মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে ওই রোগীর মৃত্যুর বিষয়টি তার ছেলে আল আমিন নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আম্মাকে নেওয়ার জন্য একটা ট্রলি আনতে গিয়েছি, আমার কাছে ১৫০ টাকা দাবি করেন। ছটফট করতে করতে অক্সিজেনের অভাবে মা মারা গেছেন। চিকিৎসা পেলে আমার মা মারা যেত না। এখানে নিয়ে আসার পরে একজন ডাক্তার, নার্স কেউ কাছে আসেনি।
রোগীর স্বজনরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে রানু বেগম মাথাব্যথা ও জ্বরে ভুগছিলেন। এছাড়া তার অ্যাজমা ছিল। যার কারণে তার প্রায়ই শ্বাসকষ্টের সমস্যা হতো। বেশ কয়েকদিন জ্বর থাকলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে রানু বেগমের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। দুপুর ২টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে সেখান থেকে করোনা ইউনিটে ভর্তি করাতে বলা হয়। পরে ভর্তি করা হলে মূমূর্ষ রোগী রানুকে কর্তব্যরত চিকিৎসক অক্সিজেন দিতে বলেন।
রোগীর দুই স্বজনের অভিযোগ, অক্সিজেন দেওয়ার জন্য অক্সিজেনের মিটার কিনতে ৫ হাজার টাকা দাবি করেন। শেষে আমরাই অক্সিজেন পরিমাপের মেশিন কিনে আনি। তারপরও তারা অক্সিজেন দেন নাই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সম্পূর্ণ গাফিলতিতে রানু বেগম মারা গেছেন। হাসপাতাল সরকারি হলেও টাকা ছাড়া এখানে কোনো চিকিৎসা পাওয়া যায় না।’
রোগীর এক স্বজন স্বপন অভিযোগ করে বলেন, অক্সিজেনের জন্য আমরা নিচতলার ওয়ার্ড মাস্টারের রুমে গেলে তিনি নার্সের রুমে পাঠান। নার্সের কাছে গেছে তিনি ওয়ার্ড মাস্টারের কাছে পাঠান। এর একপর্যায়ে ওয়ার্ড মাস্টার আমার কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডারের জন্য ৫০০ টাকা দাবি করেন। আমরা টাকা না দেয়ায় তিনি সিলিন্ডারও দেননি। উল্টো আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এদিকে করোনা ওয়ার্ডের অভিযুক্ত ওয়ার্ড মাস্টার মশিউর রহমান জানান, তিনি কোনো রোগীর স্বজনকে গালিগালাজ করেননি। তাছাড়া অক্সিজেনে দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই। অক্সিজেন দিয়ে থাকেন দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্সরা।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘করোনা ইউনিট থেকে অক্সিজেন দেওয়া হবে না’ এমন হওয়ার কথা নয়। ‘অক্সিজেন সিলিন্ডার দিতে স্টাফরা টাকা দাবি করবেন’ এটিও হওয়ার নয়। বিষয়টি আমার জানা নেই, আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’