রাজবাড়ীঃ আগামীকাল রোববার (১ জুলাই) দেশের মিল-কারখানাগুলো চালু হওয়ায় দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ভিড় জমে ঢাকামুখি যাত্রীদের। তবে বেলাশেষ হতেই যাত্রীর সংখ্যা কমেছে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে।
শনিবার সকাল থেকেই যাত্রীর চাপ দেখা যায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাট এলাকায়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঢাকামুখী লাখো মানুষের ভিড় ও ব্যক্তিগত গাড়ীর চাপ দেখা যায় এই নৌরুটে। স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করেই সেসকল মানুষ এইসকল ঘাট দিয়ে ফেরিতে ওঠে।
বিকেলে সরেজমিনে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ৫ নং পন্টুনের দুটি পকেটে দাঁড়িয়ে আছে দুটি ফেরি। ফেরিতে যাত্রী তেমন একটা চোখেই পড়েনি। তবে কিছু ব্যক্তিগত গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাক ফেরিতে উঠতে দেখা যায়।
এর আগে বেলা ৫টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে ছিল জনস্রোত। মানুষের চাপে একটি ফেরিতেও কোন যানবাহন উঠতে পারেনি। প্রতিটি ফেরিতেই শতশত যাত্রী নিয়ে ঘাট ছাড়তে দেখা গেছে। এমনকি যাত্রীদের চাপে অ্যাম্বুলেন্স পর্যন্ত উঠতে হিমসিম খাচ্ছে। ঘাট কর্তৃপক্ষ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর বিশেষ তৎপরতায় অ্যাম্বুলেন্সগুলো ফেরিতে সক্ষম হয়।
ভোর থেকেই দৌলতদিয়া ঘাটে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে বিভিন্ন উপায়ে ঘাটে আসা যাত্রীদের ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। কঠোর লকডাউনে গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে যানবাহন সংকটে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা এসব যাত্রীদের জন্য কঠিন হয়ে পড়ে।
এদিকে বিকেল থেকেই কোনো যানবাহন না থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে অনেকটা ফাঁকা অবস্থায় ফেরিগুলোকে পন্টুনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে দেখা যায়। দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
তাছাড়া ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ছোট যানবাহনের চাপ ছিলো চোখে পড়ার মতো। একেবারে বিপাকে পড়া মানুষ বৃষ্টির মধ্যই বের হয়েছে। সেই বৃষ্টি-কাঁদা উপেক্ষা করেই অনেকেই আসছেন ফেরি ঘাটে। কেউ পায়ে হেঁটে, কেউ রিকশায় আবার কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে। অনেককে দেখা গেছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা রিজার্ভ করে ঘাটে আসছেন ঝুঁকি নিয়ে। তারা এসে সরাসরি ফেরিতে উঠছেন।
এদিকে ঢাকামুখী মানুষের ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে, লকডাউনের মাঝে মিল-কারখানা কেন চালু করা হলো? আর মিল-কারখানাই যদি চালু হবে তাহলে গণপরিবহন কেন বন্ধ। আমাদের এই ভোগান্তির মানে কি?
ফেরিতে ঢাকা যাওয়ার যাত্রী আলীম বলেন, আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। পথে বিভিন্ন স্থানে পড়তে হয়েছে বিড়ম্বনায়। দুই-তিন গুণ ভাড়া দিয়ে আমাদের আসতে হয়েছে৷ ঢাকা যেতে আরও তো পথ বাকিই আছে। না জানি কি হয়।
ঘাট কর্তৃপক্ষ জানায়, শুরুতে সীমিত ফেরি চললেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে যাত্রীর চাপ বাড়তে থাকায় ফেরি বাড়ানো হয় এই নৌরুটে।
তবে সাধারণ যাত্রীর চাপ কিছুটা কমলেও মাঝারি গাড়ীর আনাগোনা রয়েছে। তবে মানুষ এখন বিনা-বিড়ম্বনায় এই ঘাট পার হতে পারছে।