ঠাকুরগাঁওঃ ঈদুল আজহার বাকি মাত্র ৩ দিন। ঠাকুরগাঁওয়ে শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে আসন্ন ঈদুল আজহার পশুর হাট। স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে হাটের বেচাকেনা। ক্রেতাদের সমাগম বাড়ায় গরুর দাম কিছুটা বেড়েছে। এতে হতাশাগ্রস্ত খামারিদের মুখে কিছুটা হাসি ফুটেছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রখর রোদ, বৃষ্টি গরমের মধ্যেই হাটে পশু বেচাকেনা হচ্ছে। জেলার লাহীড়ি, মাদারগঞ্জ, খোচাবাড়ী, আলাদীহাট, নেকমরদ হাট, কাতিহার হাটসহ জেলার সকল পশুর হাটগুলো সরগরম হয়ে উঠেছে।
কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ঠাকুরগাঁওয়ে পশুর হাটগুলো জমে উঠেছে। তবে এসব হাটে পুরোপুরিভাবে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমন আরো বেশি আকার ধারন করতে পারে এমনটি মনে করছেন অনেক সচেতন নাগরিক। তবে অনেক হাটে সামাজিক দুরত্ব ও মাস্ক পড়ার জন্য প্রশাসন ও ইরাদারদের প্রচার প্রচারনা ও জরিবানার বিষয়টি লক্ষ করা গেছে।
প্রতি বছর কোরবানির সময় হাট গুলোতে প্রখর রোদেও বৃষ্টির মধ্যে কেনা বেচা চলে অবিরাম, প্রচর আমদানির কারনে পশু রাখার ঠাই পর্যন্ত থাকেনা এবার ও তেমন চিত্র দেখা যায়। হাটে। ও শুধু হাটে নয় বেচাকেনা চলছে গ্রামের রাস্তা, কৃষকের বাড়ি ও খামারেও। তবে গত বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি বলে জানা গেছে। গত ১৬ জুলাই শুক্রবার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাইরী হাট।
হাট-বাজার দখল করে রেখেছে দেশীয় গরু। হাটে বিপুল পরিমান বিভিন্ন জাতের দেশি ও বিদেশি গরু আমদানি করা হয়। বাজারে বড় লাল গরু(লালু) বিক্রেতারা হাঁকছেন ১ লক্ষ ৫৫ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৭০ হাজার। এছাড়া বাজারে সব ধরনের ছোট বড় গরু ক্রয় বিক্রয় করা হয়। যার কোনটি কুরবানির পশুর দাম দাম ৩০ হাজার। যার কোনটি কুরবানির পশুর দাম ৫০ হাজার আবার কোনটি ৬০-৭০ হাজার আবার কোনটি কুরবানির পশুর বিক্রি হচ্ছে দেড় লক্ষ টাকায়।
সদর উপজেলার খামার ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীরা মোটেও সুবিধা করতে পারেনি তিনি জানান, ঈদকে ঘিরে গত বছর ভারতীয় গরুর অনেক চাহিদা থাকলে ও এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। এবার বাজারে ভারতীয় গরুর চাহিদা অনেক কমে গেছে। ক্রেতারা দেশীয় গরু খুজছেন সবার আগে।
নজরুল ইসলাম নামে এক ক্রেতা জানান, দেশি গরু কিনতে চাই। গত বছরের তুলনায় এবার গরর দাম একটু বেশি। এবছর বছর যে ১০০ কেজি ওজনের ১টি গরু কিনতে ৫৫ হাজার টাকা গুনতে হয়েছে, গতবার সেই গরু ছিল ৪৫ হাজার টাকা। আবার ৩০০ কেজি ওজনের একটি লাল গরুর দাম হাঁকছে ১ লক্ষ ৬০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৭০হাজার টাকায়। বাজারে গরুর রং, মাংশের ওজন ও কুরবানি করার উপযোগী ভালো গরুর দাম ও চাহিদা একটু বেশি। কুরবানি করার উপযোগী ১২-১৪ কেজি ওজনের ১টি খাশি ছাগল বিক্রি হচ্ছে ১০-১২ হাজার টাকায়। আবার বিক্রেতারা ২০ থেকে কেজি ২৫ওজনে একটি লাল রাম ছাগলের দাম হাঁকছেন ২৫-২৬ হাজার টাকায়।
ঠাকুরগাঁও জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ আলতাফ হোসেন জানায়, ঠাকুরগাঁও জেলায় গরুর খামারের সংখ্যা ১১,৭৮২। এবার আর কুবানী যোগ্য পশুর সংখ্যা ৮০,৪৫৯ টি। ষাড়, গাভী, মহিষ মিলে কুরবানী যোগ্য পশুর সংখ্যা হলো ৫৩,৮৩৪ টি। শুধু মহিষের সংখা ১৫৬ টি আর খাসি, বকরী ও ভেড়ার সংখ্যা ২০,৬৬৫ টি। জেলায় কুরবনী করার জন্য পশুর চাহিদা ৬০,০০০ হাজার। এবার জেলায় চাহিদা পুরন করে অন্য জেলাই পশু বিক্রি করা সম্ভব বলে জানান তিনি। ঈদে ক্রেতারা যাতে সুস্থ সবল গরু পেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই অনেক আগে থেকেই খামারীদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তাছারা কোবানির হাট গুলোতে তাদের মেডিকেলটিম কাজ করছে।
ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কোরবানী উপলক্ষে অর্থনীতির চাকা সচল রাখার এই হাট গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। তার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য উপজেলা প্রশাসন ও চেয়্যারম্যানদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া শান্তি বজায় রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তত রয়েছে। হাট-বাজারসহ সর্বত্র পুলিশের ব্যাপক নজরদারি রয়েছে।