বরগুনাঃ ‘সকাল এগারটা শনিবার ( ১০ জুলাই) দিকে এক গৃহ বধূর ফোনে রিংটন বেজে উঠল। কলটি রিসিভ করতেই একজনের কণ্ঠ ‘হ্যালো আপা আমি বিকাশের এজেন্ট বলছি, আপনার বিকাশ নম্বরে ১৮ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে কিছু টাকা জাল দেওয়া হয়েছে। আপনার নামে বিকাশ অফিসে একটা কম্পেলেইন করেছি , তাই অফিস থেকে আপনার বিকাশ নম্বর বন্ধ করে দিবে।’
তাই আপনার নম্বরটি পুনরায় সচল করতে হলে আপনার গোপন পিন নম্বরটি এবং ০১৯১৪৪২৬৫১৯ নম্বরে দ্রুত টাকা পাঠান। ভদ্র মহিলা সকল সোয়া এগারটার দিকে পৌর শহরের এক বিকাশ এজেন্টের কাছ থেকে বাকীতে তড়িগড়ি করে টাকা পাঠায়। পর পরই নম্বর হ্যাক, সঙ্গে বিকাশে থাকা ২১ হাজার ৫০০ শত টাকা খোয়া গেল তার।
বলছিলাম বরগুনার বেতাগী উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের ছোট মোকামিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিরীন আক্তারের কথা। তার স্বামী মো: জসিম উদ্দিন মালেশিয়ায় একটি সেরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত।
গৃহবধূ শিরীন আক্তার বলেন, ‘ আমিও কিঝু বূঝে উঠার আগেই অকপটে বেশকিছু তথ্য দিয়ে দেই। এরপরই অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়, সেখান খেকে টাকাও চলে যায়।’
একই অবস্থা তৈরি হয়েছে উপজেলার আরও শত শত ব্যক্তির বেলায়। নি:স্ব হয়ে যাওয়া এসব ব্যক্তিরা জানান, ‘ ফোন রিসিভ করেই বিপদ ডেকে আনা হয়। বিকাশ অফিসের নম্বর ভেবে তাদের তথ্য দেই এরপরই তাদের নম্বর থেকে সব টাকা চলে যায় প্রতারকদের কাছে।’
তবে এ বিষয়ে বিকাশের আঞ্চলিক কর্মকর্তারা জানান, বিকাশ থেকে কোনো গ্রাহককে তথ্য জানতে ফোন দেয়া হয় না। তাছাড়া বিকাশের হটলাইন শুধু ১৬২৪৭ নম্বরে ফোন করে গ্রাকহ তথ্য জানা ও সেবা নিতে পারবেন। হটলাইনের নামে +১৬২৪৭, কিংবা ০০১৬২৪৭ নম্বরগুলো ফেক বা প্রতারকের। এ বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
যেভাবে প্রতারণা করা হয়
প্রথমে বিকাশ এজেন্টদের কাছ থেকে কৌশলে বিকাশ নম্বর সংগ্রহ করে প্রতারকরা। এরপর এজেন্ট সেজে ফোন দেয়ার পর বিকাশ হটলাইনের (১৬২৪৭) সঙ্গে মিল রেখে +১৬২৪৭ কিংবা ০০১৬২৪৭ নম্বর থেকে ফোন দেয়া হয়। পরে নম্বরটি সাময়িক হ্যাক করে ডি-অ্যাকটিভ করা হয়।
এরপর গ্রাহককে বলা হয়, বিকাশ নম্বর অ্যাকটিভ করতে আপনার গোপন পিন নম্বরের সাথে বিকাশ হটলাইন (১৬২৪৭) নম্বরটি গুন করে যোগফলটি জানান। যোগফলটি জানার পরই তারা হটলাইন অর্থাৎ ১৬২৪৭ নম্বর দিয়ে ভাগ করলেই পিন নম্বরটি চলে আসে।