রংপুরঃ নগরীতে করোনার বিস্তার রোধে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধ মানাতে মাইকিং করছে পুলিশ। নগরে জনসমাগম কমাতে বাড়ানো হয়েছে তৎপরতা। গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও পয়েন্টে বসানো হয়েছে পুলিশি চেকপোস্ট। গান ও কবিতার মাধ্যমে করোনার ভয়াবহতা তুলে ধরে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।
মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকাল নয়টা থেকে বেলা তিনটা পর্যন্ত রংপুুুর নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তবে পুলিশি তৎপরতা থাকলেও বেশির ভাগ মানুষ উদাসীনভাবে চলাফেরা করছেন।
দুপুরে রংপুর নগরের স্টেশন রোড, কলেজ রোড, শাপলা চত্বর, গ্রান্ড হোটেল মোড়, প্রেসক্লাব মোড়সহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মাইকিং করতে দেখা যায় মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদকে। প্রচার মাইক থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনসাধারণকে চলাফেরা করার আহ্বান জানানো হয়। একই সঙ্গে করোনার বিস্তার রোধে মুখে মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জনসমাগমস্থল এড়িয়ে চলাসহ জ্বর, সর্দি, কাশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হচ্ছে।
সোমবার (২৮ জুন) থেকে শুরু হওয়া সীমিত পরিসরে তিনদিনের লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সড়কে রিকশা, অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল চালকের অধিপত্য ছিল একচেটিয়া। পণ্যবাহী যানবাহনের পাশাপাশি থ্রি-হুইলার, প্রাইভেটকার, মাইক্রো ও মিনিবাস চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে। খোলা রয়েছে শপিংমল, মার্কেট ও ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো।
এদিকে সরকারি বিধিনিষেধ মানাতে সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া, অহেতুক ঘোরাঘুরি ও মোড়ে মোড়ে আড্ডা বন্ধে মহড়া বাড়িয়েছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন।
সকালে নগরের লালবাগ থেকে মেডিকেল মোড় এলাকা পর্যন্ত প্রধান সড়কে বেশির ভাগ দোকানপাট খোলা রাখতে দেখা গেছে। কিছু কিছু শপিংমল ও মার্কেটের দোকান আংশিক খোলা রেখে চলছে বিকিকিনি। রংপুর সিটি বাজার, ধাপ সিটি বাজার, কামাল কাছনা বাজার, শাপলা চত্বর খান বহুমুখী বাজার ও কামারপাড়া বাজারসহ ছোট-বড় বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজারগুলো মানুষের উপচে ভিড় ছিল। তবে বেশির ভাগ জায়গাতেই ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিধিনিষেধ মানার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। অনেকেই পুলিশ দেখে মুখে মাস্ক পড়লেও বেশির ভাগ লোকজন তা আমলে নিচ্ছেন না। অফিস, আদালতে সেবা প্রত্যাশী মানুষদের উপস্থিতি দেখা গেছে। স্বাভাবিক ছিল ব্যাংকিং কার্যক্রম।
নগরীর রংপুুুর প্রেসক্লাব চত্বরের সামনের সড়কে মাইকিং করতে দেখা যায় ওসি আব্দুর রশিদকে। এসময় তার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, জনগণকে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ঘরে থাকতে ও প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্ক হবার আহ্বান জানানো হচ্ছে। আগামী ১ জুলাই থেকে ঘোষিত কঠোর লকডাউন শক্তভাবে কার্যকর করা হবে।
লকডাউনে যারা বিধিনিষেধ অমান্য করে চলাফেরা করবে এবং সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান ওসি আব্দুর রশিদ।