1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

বেনাপোল কাস্টমসের ৮ শর্তে আমদানি বাণিজ্য: ধীরগতির শঙ্কা

মনির হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৪, ২০২১, ০১:৩৩ পিএম বেনাপোল কাস্টমসের ৮ শর্তে আমদানি বাণিজ্য: ধীরগতির শঙ্কা
ছবিঃ আগামী নিউজ

যশোরঃ দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে ভারত থেকে আমদানি বাণিজ্য ও পণ্য ছাড়করনের ক্ষেত্রে ৮ শর্ত জারি করেছে কাস্টমস হাউস।

এসব শর্তের ফলে কাস্টমস কর্মকর্তারা অনিয়ম কমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে  মনে করলেও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, এতে আমদানি বাণিজ্যে যেমন ধীরগতি নামবে তেমনি অতিরিক্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় তৃণমূল পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যে আগ্রহ হারাবেন। সম্প্রতি বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান সাক্ষরিত শর্ত জারির অনুলিপিটি অবগতির জন্য বাণিজ্যের সাথে সংশ্লিষ্ট ৮টি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়েছে।

এসব শর্তের মধ্যে রয়েছে, একটি সুনিদিষ্ট ও ডিটেইল প্যাকিং লিষ্ট (সুনিদিষ্ট বর্ণনা.মার্কস নম্বর,আর্ট নম্বর,পার্ট নাম্বার ও ব্র্যান্ড নামসহ) এবং সুস্পষ্ট কান্ট্রি অব অরজিন থাকা বাধ্যতামূলক, আমদানিকৃত পণ্য চালানের বিপরীতে  দাখিলকৃত বাণিজ্যিক দলিলাদির সঙ্গে  ডিটেইল প্যাকিং লিস্ট  এবং কান্ট্রি অব অরজিন  দাখিল করতে না পারলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, আমদানিকৃত পণ্য চালানের  প্রতিটি প্যাকেজে  একের অধিক আইটেম মিশ্রিত অবস্থায় আমদানি করা যাবে না।

একটি প্যাকেজে শুধুমাত্র একটি আইটেম আমদানি করা যাবে, এসোটেড গুডস এর প্রতি কনসাইনমেন্ট ৫০০ এর বেশি প্যাকেজ আমদানি করা যাবে না, একটি পণ্য চালান টু হুইলার, থ্রি হুইলার ও ফোর হুইলার  পার্টস মিশ্রিত অবস্থায়  আমদানি করা যাবে না। পৃথক পণ্য চালান আমদানি করতে হবে, ফেব্রিকস কিংবা অন্য কোন পণ্যের  কমন ঘোষণা  (অল কাইন্ডস অব ফেব্রিকস) না দিয়ে সুনিদিষ্ট ভাবে যেমন: শার্টি, প্যান্টিং, কটন, সিনথেটিক, ওড়না, সিনিল ভেলভেট ফ্রেব্রিকস  প্রভৃতি নামে ঘোষণা দিয়ে  পণ্য চালান আমদানি করতে হবে, একই পণ্য চালান ২৫টির অধিক  আইটেম আমদানি করা যাবে না, সীমান্তে এন্টি পয়েন্টে  পণ্য চালান রিসিভ করতে হলে সংশ্লিষ্ট সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মালিক কর্তৃক সংশিষ্ট প্রতিনিধিকে প্রদত্ত এনওসি দাখিল করতে হবে, আনঅথরাইডস  সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট/তাদের প্রতিনিধি/কর্মচারী  কাস্টমস হাউজে প্রবেশ এবং আমদানিকৃত পণ্য চালান খালাস কাজে  নিয়জিত করা যাবে না।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, কাস্টমস কর্তৃক নির্দেশিত শর্তের কয়েকটি যৌতিক আছে। তবে এর অধিকাংশ  শর্ত নিয়ম মেনে আমদানি করতে গেলে এতে বাণিজ্যে যেমন ধীরগতি নামবে তেমনি অতিরিক্ত খরচ বেড়ে যাওয়ায় লোকশানের কারণে এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ হারাবেন অনেক ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে অবগত করা হয়েছে।

বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, বৈধ নিয়ম মানতে সব  ব্যবসায়ীরা বাধ্য। তবে এখানে কয়েকটি শর্ত রয়েছে যা মেনে পণ্য আমদানি করতে গেলে আমদানি খরচ অনেক গুণ বেড়ে যাবে। এতে ছোট-খাট ব্যবসায়ীরা এত খরচ বহন করে আমদানি করতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। তিনি আরো বলেন, এক কনসাইনমেন্টে  বিভিন্ন প্রকারের পণ্য ব্যবসায়ীরা আমদানি করলেও সরকারকে যথাযথভাবে রাজস্ব পরিশোধ করা হয়। তবে দুই একজন অসৎ ব্যবসায়ীর কারণে এমন শর্ত জারি সাধারণ ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি বাড়াবে।

বাংলাদেশ মোটরপার্টস ব্যবসায়ী সমিতি যশোর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক শাহিনুর রহমান জানান, করোনায় একেতো ব্যবসায় মন্দাভাব যাচ্ছে, তার উপর এ ধরণের শর্ত ব্যবসার পরিবেশ নষ্ট করবে। বিশেষ করে ছোট আমদানিকারকরা ব্যবসা করতে পারবে না। কাস্টমের কাজ কম করার উদ্দেশ্যে এগুলো করা হয়েছে। অথচ সরকারকে আমরা রাজস্ব পরিশোধ করছি যথাযথভাবে। প্রয়োজনে সরকার লোকবল বাড়াক।

যশোর চেম্বার অব কর্মাসের সাবেক সভাপতি মিজানুর রহমান খান বলেন, কাস্টমস বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে শর্ত জারি করেছে তা তৃণমূল পর্যায়ের ক্ষুদ্র আমদানিকারকেরা আর ব্যবসা করতে পারবেন না। কারণ এতে কনসাইনমেন্ট প্রতি আনুসাঙ্গিক  খরচ দ্বিগুণ হারে বাড়বে। যার প্রভাব পড়বে দেশীয় বাজারে আমদানি পণ্যের উপর। তিনি আশা প্রকাশ করেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জারিকৃত কয়েকটি শর্ত পূর্ণ বিবেচনা করবেন।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের ডেপুটি কমিশনার শামিমুর রহমান জানান, ৮ শর্ত মেনে পণ্য আমদানি হলে সরকারের যেমন রাজস্ব আয়ে স্বচ্ছতা বাড়বে তেমনি অনিয়ম অনেকাংশে কমে আসবে। খুব দ্রুত এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলেও জানান তিনি।

জানা যায়, দেশে চলমান ১২টি স্থলবন্দরের মধ্যে সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল বন্দরের কাস্টমস হাউজ। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি। চট্রগ্রাম বন্দরের পর বেনাপোল বন্দরের অবস্থান। প্রতিবছর বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকার আমদানি ও ৮ হাজার কোটি টাকার রফতানি বাণিজ্য হয়ে থাকে।

আমদানি বাণিজ্য থেকে সরকারের বছরে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আসে। অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি বাণিজ্যে ব্যবসায়ীদের নানান বৈধ সুবিধা থাকলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম জারিতে এপথে ইতোমধ্যে অনেক ব্যবসায়ীরা আমদানি বন্ধ করেছেন। এতে গত কয়েক বছর ধরে রাজস্ব আয় ব্যাপক হারে কমে এসেছে। তবে নামধারী কিছু  অসৎ ব্যববসায়ী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে সরকারে রাজস্ব ফাঁকিও দিচ্ছে অভিযোগ রয়েছে।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner