1. প্রচ্ছদ
  2. জাতীয়
  3. সারাবাংলা
  4. রাজনীতি
  5. রাজধানী
  6. আন্তর্জাতিক
  7. আদালত
  8. খেলা
  9. বিনোদন
  10. লাইফস্টাইল
  11. শিক্ষা
  12. স্বাস্থ্য
  13. তথ্য-প্রযুক্তি
  14. চাকরির খবর
  15. ভাবনা ও বিশ্লেষণ
  16. সাহিত্য
  17. মিডিয়া
  18. বিশেষ প্রতিবেদন
  19. ফটো গ্যালারি
  20. ভিডিও গ্যালারি

চাঁদপুরে সনাতন ধর্মালম্বিদের বাড়ীঘর অবরুদ্ধ করার অভিযোগ

প্রান কৃষ্ণ দাস,চাঁদপুর জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ৮, ২০২১, ০৯:৩২ পিএম চাঁদপুরে সনাতন ধর্মালম্বিদের বাড়ীঘর অবরুদ্ধ করার অভিযোগ
ছবি: আগামী নিউজ

চাঁদপুর: পৌর ১৪নং ওয়ার্ডের বাবুরহাটে কয়েকটি সনাতনধর্মালম্বির বাড়ীঘরে একই সময়ে অবরুদ্ধ করে তাদের 'দেখে নেওয়ার হুমকি' দেওয়া হয়েছে বলে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে! অবশ্য ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায়। তিনি জানান, আতঙ্কিত হওয়া থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে। বিষয়টিকে আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখবো। কারা এ ঘটনার সাথে জড়িত তা দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে খুঁজে বের করে সর্বোচ্চ আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গত রোববার (৬ জুন) রাত থেকে ভোররাত পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনা পুলিশ জানলেও তেমন কোন পদক্ষেপ নেয়নি বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

জানা যায়, রতন পাল, বিজয় পাল, বিনয় পাল, বিপ্লব পাল, সুমন পালের বাড়ীতে যাওয়ার ঘটনায় জড়িত দুর্বৃত্তদের অস্ত্রসহ বেশ কিছু ভিডিও ফুটেজ বাবুরহাট কলেজের সিসি ক্যামেরায় ধরা পরেছে। ওই ভিডিও ফুটেজ তদন্তের স্বার্থে উদ্ধার করার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ বাহিনী।

 মঙ্গলবার (৮ই জুন) ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সোহাগ চন্দ্র সরকার জানান, ঘুমিয়ে ছিলাম। শব্দ পাচ্ছিলাম জানালার মধ্যে কে বা কাহারা ধাক্কা দিচ্ছে। উঠলাম। তখন ছাদেও ৪/৫ জনের পায়ের শব্দ শুনতে পাই। তারপর দরজার সামনে আসলাম। ওরা ওপাশ থেকে দরজা খোলার জন্য নক করতেছিলো। পরে চিৎকার দিয়েছি এবং লোকজন ডাকিয়েছি। এরপরে ওরা পালিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো প্রচন্ড আতংকে আছি।

পাশের বিল্ডিংয়ের লিটন চক্রবর্তী জানান, আমি ঘুমোচ্ছিলাম পাশের বাসায়। আমার ভাই মোবাইলে কল করে জানালো তাকে উদ্ধার করতে দরজা খুলে এগিয়ে যেতে। তখন দরজা খুলতে গিয়ে দেখি আমাদের দরজা বাইরে থেকে আটকানো। তখন অন্যদের সাহায্যে বের হই তারপর ভাইয়ের বাসায় যাই। ওখানেও দেখি ভাইয়ের বাসার দরজা আটকানো। এই ঘটনার পর থেকে আমরা আতংকে আছি। সকালে পশু জবাইয়ের বড় ছুড়ি পাই যা আমরা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছি।

প্রতিবেশী শুক্লা পাল জানালো আরো করুন কথা। তিনি জানান, রবিবারে মধ্য রাতে এসে আমাদের দরজা কে বা কারা দঁড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই। আগে পরে কখনো এমন কোন ঘটনা ঘটে নি। তাই আমরা খুব আতংকে আছি। আমার জা আতংকে তার মেয়ের সাথে বাড়ি ছেড়ে চলে গেছে। আমরা নিরাপত্তা চাই। 

একই বাড়ির সুমন পাল জানান, দুষ্কৃতির দল খুব যঘন্য কায়দায় আমাদের বাড়িতে আক্রমণ করে। এই বাড়ির ছয়টি ঘরের দরজা ওরা দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখে। বাড়ির আঙ্গিনার যে লাইটগুলো ছিলো। সেগুলোও তারা আগে থেকেই খুলে নিয়েছে। প্রত্যেকটি ঘরেই তারা ডাকাতি করার চেষ্টা করেছে। আমার কাকাতো ভাই সুজন পালের ঘরে টিন কেটে তারা ঢুকেছে। বাড়ির লোকজন টের পেয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও আমরা কেউই বের হইতে পারি নাই। প্রতি মূহুর্তে আক্রমণ সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। 

এই বাড়ীর বৃদ্ধা গীতা রানী পাল জানান, বাড়ির ছেলেমেয়েগুলোও ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছে। শুধু বলে 'এই বুঝি ওরা এলো'।

একই বাড়ির রতন পাল জানান, আমরা একটি রড, টস লাইট, লুঙ্গি ও কিছু দড়ি উদ্ধার করছি৷ তা আমরা পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছি। সন্ধ্যা হলেই আমরা আতংকে থাকি। আমাদের মধ্যে একটা ভয়ভীতি কাজ করছে। আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছি। প্রশাসনের কাছে আমাদের নিরাপত্তা চাই।

এ বিষয়ে ক্যামেরার সামনে চাঁদপুর সদর মডেল থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুজন কান্তি বড়ুয়া, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) স্নিদ্ধা সরকার, এমনকি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) সুদীপ্ত রায় কথা বলতে রাজি হয়নি। তারা একে অন্যের প্রতি কথা বলার দায়িত্ব চাপালেও কেউই গণমাধ্যমকর্মীদের ক্যামেরায় বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি।

তবে এ বিষয়ে চাঁদপুর সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি এবং বাবুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ এর অধ্যক্ষ মোঃ মোশারেফ হোসেন জানান, এটিকে চুরি বলতে আমি রাজি নই। একই বাড়ির তিন ঘরে টিন কেটে ঢোকার চেষ্টা এবং অন্য একটি বাড়ির ছাদে কয়েকজন ছিলো এবং তাদের কয়েকজন কলিংবেলও টিপেছে। দরজা না খোলায় ওরা হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে, 'আবার দেখা হবে'। আর ওই পরিবারগুলো সব গুলোই সনাতনধর্মালম্বী পরিবার। এরপর পরবর্তীতে দেখা গেছে সকাল বেলা সেখানে ছুড়ি, হাতুড়ি এইসব পাওয়া গেছে। বিষয়টিকে সহজভাবে দেখার সুযোগ নেই। এলাকায় শান্তি বিরাজ করতে হলে পুলিশকে আরো অধিকতর তদন্ত করার প্রয়োজন বলে আমি মনে করছি।

আগামী নিউজ এর সংবাদ সবার আগে পেতে Follow Or Like করুন আগামী নিউজ এর ফেইসবুক পেজ এ , আগামী নিউজ এর টুইটার এবং সাবস্ক্রাইব করুন আগামী নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে
Small Banner