গাজীপুরঃ বন্ধুদের নিয়ে মহল্লার টং দোকানে বসে চটপটি ও ফুসকা খাচ্ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র তুষার আহম্মেদ। হঠাৎ পাশ থেকে কয়েকজন বখাটে কিশোর কর্দমাক্ত কাদা ছিটিয়ে দেয় তুষার ও তার সহপাঠীদের শরীরে। এর প্রতিবাদ করায় বখাটেরা ক্ষিপ্ত হয়ে তুষারের উপর হামলা করে। খবর পেয়ে তুষারের ছোট ভাই তুহিনসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তাদেরকেও পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে বখাটেরা। এসময় ৪ জন আহত হয়।
মঙ্গলবরা দিবাগত রাত সাড়ে ৯টায় টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর ভূইয়া পাড়া শাহী জামে মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের উদ্ধার করে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। ওইদিন রাতেই থানায় অভিযোগ করতে গেলে কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে ভুক্তভোগীদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর চালায়।
আহত তুষার ও তুহিনের বড় ভাই শুভ্র জানায়, মঙ্গলবার রাতে আমাদের বাসার সামনে ভূইয়া পাড়া শাহী মসজিদ সংলগ্ন চটপটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে চটপটি খাচ্ছিলো আমার ছোট ভাই তুষার। এসময় মঈন উদ্দিন নিরব (২৫), রবিন (২১), রাশেদ (১৮), তুহিন (১৮), রাজাসহ (১৯) তাদের সহযোগী ১০/১২জন অজ্ঞাতনামা কিশোর আমার ভাইয়ের শরীরে কাদা ছুঁড়ে মারে। এর প্রতিবাদ করায় বখাটেরা আমার ভাইকে এলোপাথারি কিলঘুষি মেরে রক্তাক্ত করে আহত করে। তার ডাকচিৎকারে আমার অপর ছোট ভাই তুহিন আহম্মেদ, স্থানীয় আকতার হোসেন ও সবুজ ঘটনাস্থলে গেলে তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে বখাটেরা।
শুভ্র আরও জানায়, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘটনার দিন রাতেই থানায় মামলা করতে গেলে কিশোর গ্যাংয়ের অন্যতম দলনেতা জুয়েল মাহমুদ পারভেজ ফোন দিয়ে আমাকে মামলা না করতে হুমকি দেয়। আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ১০/১৫জন সদস্য আমাদের বাড়িঘর ও দোকানপাটে হামলা চালায়।
বখাটে এসব কিশোরদের ‘ডি কোম্পানি’ নামে একটি কিশোর গ্যাং রয়েছে। এই গ্যাং গ্রুপের দলনেতা সজিব চৌধুরি পাপ্পু ইয়াবা ও অস্ত্র মামলায় কারাগারে থাকায় তার ভাই রাজিব চৌধুরি বাপ্পি গ্যাং গ্রুপটি পরিচালনা করেন। গ্যাং গ্রুপের অধিকাংশ সদস্য কিশোর হলেও তাদেরকে স্থানীয় যুবকেরা নেতৃত্ব দেয় বলে জানান।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা অভিযোগ পেয়েছি। ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।