জয়পুরহাটঃ সংসারের অভাব ঘুচাতে ঢাকায় ট্রাক শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিল সুমন। কিন্তু বিধিবাম ট্রাকের মালামাল লোড করার সময় হঠাৎ ৮/১০ টি সিমেন্টের বস্তা তার উপর পড়ে কোমর ভেঙ্গে যায়। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিছানায় শুয়ে আছে সুমন। ১০ বছরেও কেউ খোঁজ রাখেনি সুমনের। এমনকি আজ পর্যন্ত সুমনের ভাগ্যে জোটেনি একটি পঙ্গু কিংবা ভাতার কার্ড।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার পৌর শহরের বটতলীর বাসিন্দা সুমন। পিতা মজর উদ্দিন ও মাতা ফরিদা বেগমের পুত্র সুমন। বাবা-মার সম্পর্ক ছিন্ন হবার পরে সংসারের হাল ধরতে ২০১১ সালে ট্রাকের হেলপারের কাজ করতে ঢাকার তাজপুরে গিয়েছিল সুমন।
ট্রাক থেকে মালামাল লোড করার সময়ে তার শরীরে সিমেন্টের বস্তা পড়ে কোমর ভেঙ্গে চুরমার হয়ে যায় সুমনের। সন্তানের এমন অবস্থা দেখে চাতালে কর্মরত সুমনের মা সুমনের চিকিৎসা করলেও অর্থাভাবে বেশিদূর এগোতে পারেনি। আর সেই থেকেই দীর্ঘ ১০ বছর ধরে বিছানাবন্দি হয়েই পড়ে আছে অভাগা সুমন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একটি ছোট্ট ঝুপড়ি ঘরে কাঠের চৌকিতে একপাশ হয়ে হাতে তজবী ধরে শুয়ে আছে সুমন। কোমড়ের পাশে একটি ফ্যান ঘুরছে। দুপায়ে পচন ধরেছে তার। সুমন জানায় একটি অভাব দূর করতে ট্রাকের হেলপার হিসেবে ঢাকায় গিয়েছিলাম। নিয়তির নির্মম পরিহাস অভাব তো দূর করতে পারলাম না অপরন্ত মায়ের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়ালাম।
সুমনের মা ফরিদা বেগম জানান, সন্তানের একটি প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য স্থানীয় মেয়র, কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের হাত ধরেছি, কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এ ব্যাপারে ক্ষেতলাল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল ইসলাম বুলু আগামী নিউজকে জানান, সুমনের সম্পর্কে আমি আগে জানতাম না। বিষয়টি আমার নজরে এসেছে। খুব দ্রুত সুমনের একটি কার্ডের ব্যবস্থা করা হবে।