মানবিক চিকিৎসকের অস্ত্রোপচারে প্রাণে বাঁচলো ৯০ বছরের বৃদ্ধা
আজহারউদ্দিন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৪, ২০২১, ০৩:৫৮ পিএম
ছবি সংগৃহীত
ব্রাহ্মণবাড়িয়াঃ জেলার বিজয়নগরের চর ইসলামপুর ইউনিয়নের নাজিরাবাড়ি গ্রামের মধ্যপাড়া এলাকার মাকচাঁন বেগম(৯০)।
দীর্ঘদিন যাবত মাঁকচান বেগমের ডান পা অচল। হাঁটাচলা করতে পারেন না। ভাঙ্গা পা নিয়েই কোনমতে চলছিল তার জীবন। টাকার অভাবে করাতে পারছিলেন না সঠিক চিকিৎসা।
দীর্ঘদিন ধরে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন মাঁকচান বেগম। তার স্বামী দুধ মিয়ার একমাত্র কন্যাসন্তান সখিনা আক্তারের জন্মের তিন মাসের মাখায় মাকচাঁন বেগমকে রেখে অন্য মহিলাকে বিয়ে করেন। পরে মাঁকচান বেগমকে পত্তন গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়। পরে বাবার বাড়ি নাজিরাবাড়ি গ্রামে আশ্রয় নেয়। তারপর থেকেই ভিক্ষাকে পেশা হিসেবে বেঁছে নেন মাকচাঁন বেগম।
গত ৩০ এপ্রিল ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের যমুনা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মাকচাঁন বেগম। এতো ব্যয়বহুল অর্থোপেডিক্স সার্জারি করা তার পরিবারের পক্ষে সম্ভব ছিল না।
যমুনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুলফিকার আলীর অনুরোধে তার অপারেশনের দায়িত্ব নিয়েছেন অর্থোপেডিক্স চিকিৎসক মো. সোলায়মান মিয়া এবং এনেস্থিসিয়ান চিকিৎসক সৈয়দ আরিফুল ইসলাম। গত ২ মে রাতে বিনা খরচে অবশেষে হয়েছে তার অপারেশন। তিনি বর্তমানে অনেকটাই সুস্থ আছেন। অপারেশনের সময় দুই ব্যাগ রক্ত দিতে হয়েছে।
ডাক্তাররা বলেন, এমন একটি মানবিক কাজ করতে পেরে নিজেদের ধন্য মনে করছেন। এই গরিব বৃদ্ধা মহিলার পাশে আরও অনেকেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানান যমুনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুলফিকার আলী। সবাইকে নিয়ে এমন একটি মহতী কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করছেন। কৃতজ্ঞতা জানান দুইজন মানবিক ডাক্তারদের প্রতি।
এ বিষয়ে যমুনা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জুলফিকার আলী বলেন, এই মাকচাঁন বেগমের বাবার বাড়ি আমার পাশের গ্রামে। ছোটবেলা থেকেই দেখেছি উনার স্বামী অন্য একটি মহিলাকে বিয়ে করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। পরে দরিদ্র বাবার বাড়িতেই আশ্রয় নেয়। অনেক কষ্ট করে বাড়ি বাড়ি ঘুরে মেয়েটিকে নিয়ে সংগ্রাম করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তাই তার পক্ষে এতবড় অপারেশন করা সম্ভব ছিল না। সব মিলিয়ে লাখ টাকা খরচ হওয়ার মতো। উনার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ, খাবার ও ওষুধ সবকিছু দিচ্ছি আমি।
আগামীনিউজ/এএস