দিনাজপুরে নৈশ্য প্রহরীর মেয়ে চান্স পেল মেডিকেলে
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: এপ্রিল ৮, ২০২১, ০৫:২৫ পিএম
ছবিঃ আগামী নিউজ
দিনাজপুরঃ সাবিহা আক্তার এক আদম্য প্রতিভা। আজন্মে লালিত স্বপ বড় হয়ে ডাক্তার হবে। ছোট বেলায় সবসময় থাকতো অসুস্থ সাবিহা। মায়ের কোলে ডাক্তারের কাছে ছুটাছুটি। ডাক্তারের কানে লাগানো যন্ত্র দিয়ে যখন বুক পরীক্ষা করতো অসুস্হ অবস্তাতেই সে যেন হারিয়ে যেত কল্পনার জগতে। দেখত বড় হয়ে সে ও মানুষের সেবা করছে। বড় হয় তার স্বপ্ন ধরা দিয়েছে ভাড়া করা ছোট চিলকোঠায়।
হ্যাঁ বাড়ি নয়, যেন ছোট একটা চিলকোঠাই। যখান সাবিহা আর তার ভাই সহ চার জনের সংসার পেতেছেন বাউবির দিনাজপুর উপ আঞ্চলিক কেন্দ্রর নিরাপত্তা প্রহরী সুজা মিয়া। অভাবের সংসারে তিনি স্বপ্ন দেখেন তার মেধাবী সন্তানেরা একদিন বড় হবে। বাবার নাম উজ্জ্বল করবে। নৈশ প্রহরীর মেয় হয়ে ও অদম্য সাবিহা আক্তার।
অন্য সব মেয়দের থেকে নিজেকে চিনিয়েছে আলাদা ভাবে পিইএস সি থেকে এইচএসসি সবখানেই কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে সে। এবার চান্স পেয়েছে স্বপ্নের মেডিকেল কলেজে। শিক্ষার জীবনের শুরু থেকেই স্বপ্ন মেডিকেল পড়ার, সেই স্বপ্ন বাস্তব রুপ দিয়েছে সাবিহা। সাবিহা আক্তার বাউবির দিনাজপুর উপ আঞ্চলিক কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী সুজা মিয়ার একমাত্র মেয়ে।
তিনি বগুড়া জেলার শীবগঞ্জ উপজেলার মানকর গ্রামের বাসিন্দা। ১৫ বছর যাবত দিনাজপুর সুইহারি ড্রাইভার পাড়া এলাকায় ছোট একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন। ভাই বোন মিলে চারজনের সংসার বাবা যেখানে সংসার চালাতেই হিমসিম খাচ্ছেন। সেখান থেকে সাবিহা আজ তার স্বপ্নের উচ্চশিখরে। অন্য সকল ছোল-মেয়রা যেখন কোচিং প্রাইভেট নিয় ব্যস্ত থাকে সাবিহা ব্যস্ততা তার পড়ার টেবিলে। অনেক কিছু না পাওয়ায় কেবল বাবার অল্প আয়ের টাকা দিয়েই মানিয়ে নিয়ে পড়ালখা করছেন। নিয়ছেন বড় ভাইয়ের সহযোগিতা।
সাবিহা পিএসসি,জেএসসিতে জিপিএ ৫, এসএস সিতে জিপিএ ৫ এবং ২০২০ সাল এইচএস সিতে দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ন হয়েছে। স্কুল জীবনে সবসময় প্রথম স্থানে থাকতো সাবিহা। ২০২০-২১ সেশনের মেডিকেল ভর্তি পরিক্ষায় এম.আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে বড় ভাই টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার সাজু মোল্লা সবসময় বোনের পেছনে ছিলেন ছাঁয়া হয়ে।
অভাবের সংসারে এতোদুর কী ভাবে জানতে চাইলে সাবিহা বলেন , মা-বাবার অণুপ্রেরণায় আজ আমি এতো দূর পর্যন্ত পৌঁছেছে। মা সব সময় অণুপ্রেরণা দিত এগিয়ে যাওয়ার। অভাবের সংসার বলতে যেভাবে আছি সেখান থেকে আমাকে ভালোকিছু করতে হবে। সাবিহার পিতা সুজা মিয়া বলেন আমার মেয় এবার দিনাজপুর এম.আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে আমি অনেক খুশি হয়েছি আমি তার মঙ্গল কামনা করি। সে ডাক্তার হয়ে দেশ ও দশের সেবা করবে।
আগামীনিউজ/এএস