বগুড়া: দুপচাঁচিয়া উপজেলায় এক সময় চাতাল মিল ব্যবসা হিসাবে একক প্রাধান্য বিস্তার করেছিল। লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় অনেকে চাতাল মিল ব্যবসার প্রতি ঝুঁকে পড়েন। চাতাল মিল ব্যবসার সেই সুদিন আজ আর নাই। ব্যবসায় লোকসানের কারনে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চাতাল মিল।
স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ধান ও চালের মূল্যের ব্যবধান থাকায় এবং সেই সাথে অটো মিলের দাপট সহ নানা প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে উপজেলার প্রায় ৬০ শতাংশ ড্রাম বয়লারের হাসকিং রাইস মিল প্রায় বন্ধের পথে। বর্তমান বাজার দরে ধান কিনে উৎপাদিত চাল বাজারে বিক্রয় করতে গেলে ধান ক্রয় ও চালের বিক্রয়ের মধ্যে সমন্বয় না থাকায় লোকসানের কারনে এই দুরাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান চাতাল মালিকরা।
মেসার্স আসিফ চাউল কলের সত্ত্বাধিকারী নূরুল ইসলাম জানান, অনেকে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা শুরু করায় ক্রমাগত লোকসানের কারনে তাদের পুঁজি হারিয়ে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছে।
এক সময় এই প্রতিষ্ঠানগুলোতে মাঝারি পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা ব্যবসায় যেমন লাভবান হতেন তেমনি এই চাতালগুলোতে সৃষ্টি হয়েছিল শত শত শ্রমিকের কর্মসংস্থান। এর সাথে সম্পৃক্ত চাতাল মালিকরা পুঁজিপতি বনে গিয়েছিলেন, আর শ্রমিকেরা জয় করেছিলেন দারিদ্রতা।
মেসার্স মন্ডল এন্ড সন্সের সত্ত্বাধিকারী নারায়ন চন্দ্র মন্ডল লালু জানান, প্রতিকূল অবস্থায় চাতাল মিলে শ্রমিক সংকট লেগেই থাকে। শ্রমিকদের চড়া মজুরি দিতে হয়। তাছাড়া কেউ চাতালে কাজ করতে চায় না এখন।
অনেক মুনাফা লোভীরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে উচ্চ মূল্যের আশায় মজুত করে রেখে চাতালে ধান সরবরাহের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেন বলে জানিয়েছেন চাতাল মালিকরা।
এসব চাতাল ও মিল রক্ষায় ধানের সাথে উৎপাদিত চালের মূল্য সমন্বয়ের এবং সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে ঋণ সহায়তার দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অরুন কুমার প্রামানিক জানান, অটো রাইস মিলের চালের মানের সাথে হাসকিং মিলের তৈরি চাল কিছুটা নিম্নমানের হওয়ায় চলমান বাজারে মাঝারি চাতাল মিল টিকতে পারছে না।
আগামীনিউজ/মালেক