
গাইবান্ধা: গত ৮মার্চ পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী দিবস। ঘটা করে দিবসটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও পালিত হয়েছে। কিন্ত আমাদের দেশের নারীরা সামাজিক ও পারিবারিকভাবে এখনও নিগৃহীত। সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার নলডাঙ্গা ইউনিয়নের ঘোড়ামারা গ্রামে ঘটেছে এমনি একটি ঘটনা।
ওই গ্রামের মহব্বর আলীর ছেলে রাজু মিয়ার সাথে গত প্রায় এক বছর জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সর্বানন্দপুর ইউনিয়নের ধনিয়ারকুড়া গ্রামে লুৎফর রহমানের মেয়ে রোখসানা খাতুন (২৩) এর বিয়ে হয়। বিয়ের দুই তিন মাস পরে রোখসানা এক বছর আগে রাজু মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় রোকসানা খাতুনের। গত আড়াই মাস আগে ডাক্তারি পরীক্ষায় রোকসানার গর্ভে কন্যা সন্তানের বিষয়টি নিশ্চিত হয় স্বামী রাজু মিয়াসহ তার পরিবার।
এরপর থেকেই রোকসানার ওপর নেমে আসে স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ির অমানুষিক নির্যাতন। কখনও অপরাধ করলেও মারপিট; আবার কখনও যৌতুক চেয়ে নির্যাতন চলে আসছিল মেয়েটির উপর।
এ অবস্থায় ৮ মার্চ স্বামীর বাড়িতে প্রসব বেদনা উঠলে রোকসানাকে রংপুরের একটি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যাশিশুর জন্ম দেয় রোকসানা। ক্লিনিকে চারদিন থাকার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে কন্যাসন্তানকে নিয়ে স্বামীর বাড়ি ঘোড়ামারায় আসেন রোকসানা। কিন্তু রোকসানাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে দেয়নি শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন। এসময় বাড়ির মুল গেটে তালা ঝুলিয়ে চলে যায় শ্বশুর-শাশুড়ি। সন্ধ্যা পর্যন্ত রোকসানা বাড়ির বাহিরে অবস্থান করে। পরে ৯৯৯ কল পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাবার বাড়িতে নিয়ে যায়।
ঘটনার শিকার রোকসানা খাতুনের অভিযোগ, ছেলে সন্তান চাওয়া ছিলো স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজনের। কিন্তু মেয়ে সন্তানের খবর জানার পর থেকেই তাকে নানাভাবে নির্যাতন করতো স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়িসহ পরিবারের লোকজন। সন্তান জন্মের পর স্বামীর বাড়িতে আসলে তাকে কেউ বাড়িতে ঢুকতে দেয়নি।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা জানান, পুলিশ পাঠিয়ে নবজাতকসহ রোকসানাকে উদ্ধার করে তার বাবার বাড়িতে রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আগামীনিউজ/মালেক