পটুয়াখালীঃ কেউ ডাকে ফজলু ভাই আবার কেউ বা ডাকে ফজলু কমান্ডার। তিনি পেশায় একজন কৃষক। কিন্তু কৃষি কাজ করেই তার নিজস্ব জীবন যাপন করে ক্ষ্যান্ত হন না। তিনি প্রাক্রিতিক দুর্যোগ এলেই নেমে পড়েন জনগণের দোরগোড়ায়, দিয়ে যান সাবধানে থাকার সতর্কতা। এলাকার যেকোনো সমস্যা সমাধানে তার থাকে প্রাণপণ চেষ্টা। বিভিন্ন সময়ের নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্ব পালনের ডাক আসে উপজেলা আনসার ভিডিপির অফিস থেকে। সকল কর্ম ফেলে ছুটে চলে যান স্বার্থবিহীন ওই দায়িত্ব পালন করতে। তেমনি তার নিজ এলাকায়ও রয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার মানুষ তার স্ত্রীকে বিপুল ভোটে সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য হিসেবে জয়যুক্ত করেছেন। জনপ্রিয় এই ব্যক্তি পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী গ্রামের আব্দুল খালেক হাওলাদার মেঝো ছেলে। যার কাগজ পত্রের নাম মোঃ ফজলুর রহমান (৪৩)।
তার নিজ বসতি এলাকার জনসাধারণের ভাষ্যমতে, ফজলু কমান্ডারের ব্যক্তি জীবনের বেশিরভাগ সময় জনগণের পাশে থেকে সেবা দেয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান। বিভিন্ন সময়ের প্রাক্রিতিক দুর্যোগ যেমন- সিডর, আইলা, সিত্রাং, বিজলী, মহসিন এবং মোখার সতর্কতা প্রচার নিজ উদ্দোগে চালিয়ে গিয়েছেন। জাতীয় সংসদ, ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, জেলা পরিষদ নির্বাচনে আনসার ভিডিপির দায়িত্ব পালন করেন। অন্যদিকে মৎস্য অভিযানে মাদক সেবনকারীকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধসহ মানুষের সকল বিপদে আপদে নিজেকে সর্বদা নিয়োজিত রাখেন। এ সকল সামাজিক কার্যকলাপের কারনে এলাকার জনসাধারণের ভোটে তার স্ত্রী চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর হিসেবে নির্বাচিত হয়।
ফজলু কমান্ডারের প্রতিবেশি আলহাজ্ মো. নিজাম উদ্দিন খান বলেন, ফজলু আমাদের গর্ব, সে নিজেকে সর্বদা বিনা স্বার্থে মানুষের সেবায় নিয়োজিত রেখে আসছে। যা আমরা অনেকেই পারি নাই। করোনাকালীন সময়ে সে মানুষের দারে দারে গিয়ে খোঁজ খবর রেখেছেন। তার সাধ্যমতো অসহায়দের দিয়েছেন ওষুধ। বর্তমান সময়ে তার বিনা স্বার্থের সেবায় আমরা মুগ্ধ।
মো. ফজলুর রহমান বলেন, আমি একজন কৃষকের সন্তান। আমার সাধারণ জীবন যাপনের পাশাপাশি আনসার ভিডিপির সদস্য এবং চরমোন্তাজ ইউনিয়নের দলনেতা হিসেবে কাজ করছি। পাশাপাশি মানুষের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পেরে ছোট এই জীবনটাকে ধন্য মনে করছি। শিক্ষাগত যোগ্যতায় গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করেছি। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এভাবেই আমার কৃতকর্ম চালিয়ে যেতে চাই।
জনপ্রিয় ‘ফজলু কমান্ডারের‘ স্ত্রী ইউপি সদস্যা মোসা. মোর্শেদা বলেন, আমার স্বামী সংসারের পাশাপাশি সর্বদা নিজেকে জনসেবায় নিয়োজিত রেখে আসছেন। তাতে কখনো তার সহিত আমার বিরোধ তৈরি হয়নি। বরং আমি তাকে জনসেবা করার জন্য সব সময় উৎসাহিত করে আসছি।
চরমোন্তাজ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ, কে সামসুদ্দিন বলেন, ফজলুর জন্ম এই মাটিতেই। তার কৃতকর্মে সকল সব শ্রেণি পেশার মানুষ অভিভূত। অত্র ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বর ফজলুর স্ত্রী মোর্শেদা। সমাজের ভালো কাজের জন্যই তার স্ত্রী আজ ইউপি সদস্য।
এমআইসি